বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ ২৭/ ০৫/ ২০১৬ আজকের আলোচ্য
বিষয়ঃ--[ বেদ যজ্ঞ করে
হিংসাকে জয় করো – অন্তরে কারো প্রতি হিংসা থাকলে তা দিয়ে তার অন্তর জয় করে
নিজের সুন্দর রূপ ফুটিয়ে তোলা যায় না।]
বেদ
যজ্ঞ শুরু করলেই অন্তর থেকে হিংসা দূর হয়ে যায়। তখন উপলব্ধি করা যায় - হিংসা দিয়ে হিংসাকে জয় করা যায় না। কামান বন্দুক দেগে মানুষের অন্তরের সুন্দর
রূপকে ফোটানো যায় না। যেমন গায়ের জোরে একটা গোলাপের কুঁড়িকে ফোটানো যায় না। তার
সুন্দরের বিকাশ ঘটাতে গেলে অনুগ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হয়। তখন প্রকৃতির নিয়মে আপনিই
তা বিকশিত হয়। একেই বলা হয় প্রকৃত বিপ্লব, সার্বিক বিপ্লব—চেতনার বিপ্লব। অস্ত্রের
বিপ্লবের মাধ্যমে যা কখনও সম্ভব হয় না। আনবিক বোমা নিমেষে কয়েক লাখ প্রাণীর প্রাণ
ধ্বংস করতে পারে কিন্তূ সেই বোমা প্রাণ সৃজনে অক্ষম। তার শক্তি নেই মানুষ বা অন্য
কোন প্রাণীর আসুরিক বৃত্তি নাশ করে শুভশক্তির জাগরণ ঘটাবার।
পৃথিবীর বুক থেকে কণা কণা জল বাস্পের আকারে
ওপরে উঠে যায় ও তা অদৃশ্য হয়ে যায়। সাময়িক অদৃশ্য হলেও একেবারে সেগুলি হারিয়ে যায়
না। কালে ঐ কণাগুলি একত্রিত হতে হতে মন কৃষ্ণ মেঘের আকার নেয়। কিন্তূ তখনও বৃষ্টি
হয়ে তারা নামে না। ঐ মেঘকে পাহাড় পর্বতে ধাক্কা খেতে হবে বা নীচের শৈত্যময় পরিবেশের সংস্পর্শে
আসতে হবে, তবেই বর্ষণ হবে। ডিমে তা দেওয়ার সাথে সাথেই বাচ্চা বের হয় না। মাত্রায়
মাত্রায় তা দিতে দিতে ডিমের ভিতরের অসুন্দর হড় হড়ে তরল বস্তু রূপান্তরিত হতে হতে
একটা বিশেষ মাত্রার তাপে সুন্দর পাখীর রূপ নেয়। ইনকুবেটার যন্ত্রে হাজার হাজার ডিম
ঢুকিয়ে মাত্রায় মাত্রায় তাপ সঞ্চার করা হয়। যতক্ষণ একটা বিশেষ মাত্রার তাপ
সঞ্চারিত না হচ্ছে, ততক্ষণ ডিম ডিমই থেকে যায়—নিছক জড় পদার্থ – আগের সেই অসুন্দর
রূপ। যখনই সেই বিশেষ মাত্রার তাপ পেল—হাজার হাজার ডিম ফুটে হাজার হাজার বাচ্চার
সৃষ্টি হল। বিশ্বমানব শিক্ষার মঞ্চে বেদ যজ্ঞ হচ্ছে সেই ইনকুবেটার যন্ত্র যার
দ্বারা সবায় ফুটে বের হয়ে আসবে নিজের সৎ, সত্য, সুন্দর ও জ্যোতির্ময় রূপ নিয়ে যথা
সময়ে। তখন আর কোন হিংসা বা পরমানবিক অস্ত্র তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। সদা এক প্রেমের জগতে
বিরাজ করবে নিজের সুন্দর রূপে মুগ্ধ হয়ে। জয় বেদ ভগবানে জয়।




