Home » » বেদ যজ্ঞ সম্মেলন -- ২৫। ০৫। ২০১৬

বেদ যজ্ঞ সম্মেলন -- ২৫। ০৫। ২০১৬


 বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ ২৫/ ০৫/ ২০১৬                                                    আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ--[ বেদ যজ্ঞ করেই নিজের ধর্ম রক্ষা করাই হচ্ছে জ্ঞানীদের কর্ম – ধর্ম ও জীবন, তাই কর্মই ধর্মই  আর ধর্মই জীবন জগতে জ্ঞানীদের কাছে]
 যারা জ্ঞানী তারা কর্ম – ধর্ম ও জীবনকে আলাদা ছন্দে বাঁধতে যায় না। তারা যতদিন দেহে প্রাণ থাকে ততদিন বেদ যজ্ঞ করে চলে নিজের জীবনের ছন্দে তাল মিলিয়ে। তারা জানে কর্মকে বাদ দিলে মানুষের ধর্ম রক্ষা হয় না আর ধর্মবিহীন জীবনের কোন মূল্য থাকে না এই কর্মভূমি ও জ্ঞানপীঠে। তাই তারা দেহকে  ক্ষেত ও মনকে কিষান করে  বুদ্ধিমানের মতো সদায় চাষ করে চলে বিভিন্ন জাতের ফসল ফলিয়ে জমিকে শষ্যে পরিপূর্ণ করে রাখার জন্য। কেউ যাতে তাদের কাছে এসে বিফল মনোরথ হয়ে ঘুরে না যায়- এই ধর্ম তারা পালন করার জন্যেই দেহরূপ জমি চাষ করে চলে এই জমিতেই মানুষ পাপপুণ্য দুটি বীজ দেখতে পায়। বেদ যজ্ঞ করে কে কোন বীজ রোপন করবে এবং সেই বীজ থেকে ফসল ফলিয়ে নিজ গোলা পূর্ণ করবে সেটা নির্ভর করে তার নিজের পরিবেশের উপর। দেহ রূপ ক্ষেত্রকে চাষ করার পরিবেশ তৈরী করার জন্যেই মানুষকে বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে যেতে হয়।
 এই শিক্ষাঙ্গনে গিয়ে যে যেমন গুরুর সান্নিধ্য লাভ করে দেহক্ষেত্রে  বীজ রোপণ করবে সে সেইরূপ বৃক্ষ হবে এবং সেই বৃক্ষের ফল সময়ে সে পাবে এতে কোন ভুল নেই। বীজ রোপন করে যদি কেউ বেদ যজ্ঞ অর্থাৎ নিজ ক্ষেত্রের পরিচর্যা না করে তবে কেমন করে সেই জমিতে ফসল ফলতে পারে? প্রভু জগন্নাথ তিনি জগতের সবার নাথ হয়ে সকলকে ক্ষেত্র দান করেছেন এবং প্রত্যককে নিজ নিজ ক্ষেত্র চাষ করার সব উপকরণ দান করেছেন নিজে শূন্য হয়ে। তিনি নিজের হাতে কিছুই করেন না তাই আমরা তাঁকে হাত বিহীন অবস্থায় দেখতে পায় জগতের নাথ রূপে--- তিনি নিজের হাত সবায়কে বেদ যজ্ঞ করার জন্য দান করেছেন এবং সকলের বেদ যজ্ঞ দেখে চলেছেন।
এখন স্বয়ং ভগবান জগন্নাথের হাত পেয়েও যদি মানুষ সাংসারিক মোহে লিপ্ত থেকে তাঁর জন্য বেদ যজ্ঞ না করেন তবে কিভাবে তারা নিজেকে তাঁর প্রতিনিধি রূপে জেনে তাঁর প্রেমে মশগুল হয়ে তাঁর আশ্রয়ে স্থির থাকবে?  এখানে এসে মানুষ নিজের জীবন সত্য না জানার জন্য তারা জাগতিক প্রেমে লিপ্ত থেকে আগুনে পুড়ে ছায় হতে থাকে।
কাম ক্রোধ লোভ মোহ মদ ও মাৎসর্য তাদেরকে তাড়া করে নিয়ে বেড়াই এই সংসারে এবং তারা সত্য প্রেম ছেড়ে ভেকধারী প্রেম দেখায় এই জগত সংসারে।  তারা সদগুরুর উপদেশ পেয়ে জগত প্রভুকে কিছুতেই অন্তরে ধারণ করে স্থির থাকতে পারেনা।
 এই অজ্ঞানীরা মিথ্যা বিষয়- আশয় নিয়ে জীবন কাটায়। তারা সংসারের সৎ - সত্য- সুন্দর ও জ্যোতির্ময় রূপ দেখতে না এবং বেদ যজ্ঞে স্থির থাকতে পারেনা।
 সংসার রূপ মোহ লোহার শক্ত বন্ধনে তারা নিজেকে বেঁধে ফেলে রাখতেই অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।  সেই বন্ধন-ই তাদের গলার ফাঁসি হয় মরণকালে প্রভু জগন্নাথের আশ্রয় ত্যাগ করে।
চন্দন গাছে আগুন লেগেছে দেখেও পাখী বসে সেই গাছের ডালে -- তাদেখে চন্দন  গাছ পাখীকে উপদেশ দিলেও সে কেবল হাসে- উপদেশের গুরুত্ব না বুঝে—তেমনি এই সংসার মোহে ডুবে থাকার মানুষের অবস্থা। তারা কেউ সৎ উপদেশের গুরুত্ব বুঝতে চায় না।
পাখীর ডানা আছে তাও সে  পুড়ে মরে চন্দন গাছের মোহ ত্যাগ না করতে পারায় –তেমনি  হায়-রে মানুষ মরার আগেও মোহ ত্যাগ করে কিছুতেই নিজেকে জানতে চায় না অমৃতের সন্তান রূপে।
 তাই এ জগতে নিজের থেকে বড় শত্রু আর কে আছে? নিজের মরণ নিজেই ডেকে আনছে বার বার  নিজেই নিজের শত্রুতা করে নিজের কাছে আশ্রয়হীন হয়ে থেকে।
 প্রভু জগন্নাথের আশ্রয়ে থেকে নিজে ভাল হয়ে গেলে আর কেউ শত্রু থাকবে না এ জগতে- এই সত্য জেনে নিয়ে বেদ যজ্ঞ করলেই  অলি –গলিতে তখন সকলকে মিত্র রূপে দেখতে পাবে দিব্যজ্ঞান লাভ করে। জয় প্রভু জগন্নাথের জয়।


Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide