[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে সত্যকে জেনে সেই সত্যকে স্বীকার করো ও সমর্থন করো তাতেই বিশ্বে শান্তি আসবে।]
বেদ
যজ্ঞ মানুষের জীবন থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ফলে, সত্যকে অস্বীকার করা—তাকে জেনেও অজানার ভান করা মানুষের রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সবাই নিজ নিজ দল-মত- ধর্ম –গোষ্ঠী নিয়ে অহংকারে
প্রকৃত সত্য থেকে অনেক দূরে সরে থেকে ফয়দা তুলছে। সব দল- মত- ধর্ম - গোষ্ঠী
নিজেদের প্রাধান্য বজায় রেখে বিশ্ব দখলের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তির স্বপ্ন দেখছে।
সবাই ভাবছে সারা বিশ্বের মানুষ তাদেরকে স্বীকার করে নিবে ও সবায় সেই দল-মত-
গোষ্ঠী- ধর্মমতের হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। এই অমূলক ধারণা বিশ্বাস মানুষকে পথভ্রষ্ট করে শান্তি
বিঘ্নিত করছে সারা বিশ্বে। কেন মানুষ নিজের দল, মত, গোষ্ঠী, ধর্ম ত্যাগ করে অন্য
দল, মত, গোষ্ঠীর ধর্মে দীক্ষিত হবে? মানুষের পরিচয় তো দল, মত, গোষ্ঠী, ধর্মে সীমাবদ্ধ নয়। মানুষ তো পৃথিবীর মাটি থেকে
উৎপন্ন পৃথিবীর সন্তান। সবাই তো এক সূত্রে গাঁথা বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী। কারণ এই
পৃথিবী মানুষের কর্মভূমি ও জ্ঞানপীঠ। এখানে সকলের সমান অধিকার।অধিকার কেড়ে নিয়ে
কাউকে স্থায়ীভাবে দমন করে রাখা যায় না। সবাইকে সমান অধিকার দিয়ে-ই সমতা বজায় রাখতে
হয়। এক সত্যকে সকলেই স্বীকার করে ও তাকেই সমর্থন করে সারা বিশ্বের মানুষ এক সুত্রে
গেঁথে উঠতে পারে ও বিশ্বে শান্তি- সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে। নানা দল- নানা মত-
নানা ধর্ম- নানা গোষ্ঠী –নানা সম্প্রদায় গড়ে উঠুক তাতে শান্তি বিঘ্নিত হবেনা যদি
সকলে একই মঞ্চের কর্মী হয়। লক্ষ্য যদি সকলের এক থাকে। আমরা যখন একই ঘরে সবাই বাস
করি- তখন নিজেদের আলাদা ভাবাটা অন্যায়। আমরা একই ঘরের কর্মী—আমরা সবাই বিশ্বমানব
শিক্ষার কর্মী। এর ঊর্ধ্বে মানুষের জন্য সত্য আর কোনো সুত্র থাকতে পারেনা। এই
সত্যকে বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে যখনি বিশ্ববাসী স্বীকার করে নিবে ও সমর্থন
করবে তখনি সারা বিশ্ব এক সুত্রে গেঁথে উঠবে ও সারা বিশ্বে জ্ঞানের মহাবিপ্লব দ্বারা
শান্তি, সত্য, ঐক্য ও সাম্য প্রতিষ্ঠা হবে। বিশ্বমানব শিক্ষাই একমাত্র মানব জাতির
শান্তির ঘর। এই ঘরে বসে মানুষ যখনি বেদ যজ্ঞ করতে শুরু করবে তখনি মহাসত্য উঠে আসবে
সকলের মঙ্গলের জন্যে—এই পন্থাতেই মানুষ এক অনাবিল আনন্দের জগতে ও প্রেমের জগতে
অবস্থান করে বিশ্ববাসীকে পরম শান্তির জগতে ধরে রাখতে পারবে মানব জাতিকে সৎ ও
কল্যাণের পথে আহ্বানের মাধ্যমে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।