Home » » বেদ যজ্ঞ করে পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধার আসনে বসাও-- কারণ পিতা -মাতাই হচ্ছেন তোমাদের স্বর্গের দেব-দেবী ও ঈশ্বর।

বেদ যজ্ঞ করে পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধার আসনে বসাও-- কারণ পিতা -মাতাই হচ্ছেন তোমাদের স্বর্গের দেব-দেবী ও ঈশ্বর।


[  বেদ যজ্ঞ করে পিতা- মাতাকে শ্রদ্ধার আসনে বসাও – কারণ পিতা-মাতাই হচ্ছে তোমাদের স্বর্গের দেব-দেবী ও ঈশ্বর]
 বেদ যজ্ঞ তোমাদের জীবনকে পবিত্র করে তুলছে এবং তোমরা সকলেই তোমাদের স্বর্গীয় পিতা- মাতা ও পূর্ব পুরুষদের অন্তরে এই বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে আনন্দ সৃষ্টি করে চলেছো ও তাঁদের আশীর্বাদ পেয়ে চলেছো।  বেদ যজ্ঞবিহীন মানুষ চরিত্রহীন। চরিত্রহীন মানুষকে কে আশীর্বাদ করবে?  বেদ যজ্ঞের মাধ্যমেই তোমাদের অন্তরে শ্রদ্ধা জাগ্রত করে জানতে হবে - পিতা-মাতা এই জগত সংসারকে ধরে রেখেছে। তাদের সম্পর্ক নিয়ে সন্তান সন্ততির  সকলের  সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সূত্র ধরে মানুষের সাথে মানুষের আত্মীয়তার সম্পর্ক যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। রক্তের সম্পর্ক তো প্রত্যেক মানুষের সাথে মানুষের রয়েছে সৃষ্টির প্রারম্ভকাল থেকে। অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এই সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ সম্পর্ক ত্যাগ করে ছিটকে যেতে পারবে না। পিতা-মাতার সম্পর্ক ত্যাগ করে তুমি যাবে কোথায়? এই জগত সংসারে যেখানে যাবে সেখানেই দেখতে পাবে তাদের প্রেমের স্পর্শ। তাদের প্রেম ছাড়া জগত- সংসার অসার ও অচল। তাদের জন্যই সন্তান ঠাকুর বাবা, ঠকুর মা, কাকা, কাকীমা, পিসি, মামা ,মামি দাদু,দিদিমা ইত্যাদি নামধারী সম্পর্ক ও তাদের প্রেম পেয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে। সংসারের নিয়মে সকলকে পিতা-মাতা হতে হবে। তাই পিতা-মাতার ন্যায় সন্তানের নিকট অন্য কেউ শ্রদ্ধার পাত্র হতে পারে না। পিতা- মাতাই সন্তানের নিকট সাক্ষাৎ ঈশ্বর ঈশ্বরী। তাদের সেবা যত্ন করার অর্থ পৃথিবীর বুকে স্বর্গ রাজ্য তৈরী করা। জননী ও জন্মভূমি অর্থাৎ এই পৃথিবী স্বর্গের থেকেও বড় ও গর্বের। সেরূপ পিতা স্বর্গ, ধর্ম, পরমপদ ঈশ্বর থেকেও প্রত্যেকের নিকট শ্রদ্ধার ও ভালবাসার পাত্র। তাদেরকে অবহেলা করে কোন মানুষ জ্ঞানী হতে পারে না বা সংসারে সুখী হতে পারে না। জ্ঞানের অভাবের জন্য আজ মানুষ পিতা-মাতার গুরুত্ব সংসারে বুঝতে পারছে না। জড় বস্তুর জ্ঞান লাভ করে মানুষ মাটির প্রতিমাকে মা- বাবা বা ঈশ্বর জ্ঞানে ডাকছে ও  পূজা করছে আর পিতা মাতাকে সংসারের জঞ্জাল মনে করছে। তাই সারা পৃথিবীর প্রতিটি সংসার এই বৈজ্ঞানিক যুগেও হয়ে উঠছে জড়পিণ্ড স্বরূপ পুতুলের সংসার।
   গভীরভাবে প্রত্যেক মানুষকে চিন্তা করতে হবে তাদের সংসারের কথা। প্রত্যেক মানুষের পিতা- মাতা আছে বা ছিল। পিতা মাতা বিহীন কেউ এই সংসারে আসে নি। পিতা-মাতা হবার জন্যই মানু সংসার করছে ও সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্যই সকলে বিভিন্ন মতে বা পথে গিয়ে বিয়ে করে সংসার ধর্ম পালন করছে। জ্ঞানী হোক আর অজ্ঞানী হোক এই সংসারে সকলে সন্তানের জন্ম দিয়ে পিতা মাতার আসন অলংকৃত করে সংসারকে ধরে রেখেছে। পিতা-মাতা সন্তানকে লালন পালন করে বড় করে তূলছে। এই সুত্রকে কেউ ছিন্ন করতে পারবে না। তাই যারা পিতা মাতার সম্পর্ক জানে না বা বুঝার চেষ্টা করে না তারা পশুর সংসার করে।
    পশু-পাখী- জীব –জন্তু সকলের জন্ম পিতা মাতার প্রেমের সম্পর্ক থেকে। তারা কেউ এই সম্পর্কের কথা জানে না। তমগুনে আচ্ছন্ন থেকে প্রকৃতির বশে তারা সন্তানের জন্ম দিয়ে বংশ বৃদ্ধি করে ও মায়ায় আবদ্ধ হয়ে শক্তির রহস্য বুঝতে পারে না ও পিতা-মাতার সম্পর্কের কথা মনে রাখতে পারে না। তাই তাদের কে পিতা আর কে মাতা সেই জ্ঞান থাকে না। কিন্তু মানুষ মননশীল জীব। তাদের জ্ঞান বুদ্ধি- রুচি আছে। তারা কেবল প্রকৃতির ধর্মে ধার্মিক নয়। তাদের আলাদা ধর্ম আছে ও ধর্মজ্ঞান আছে। তাই তারা পিতা- মাতার সম্পর্ককে কখনও অস্বীকার করতে পারে না। তাই বেদ যজ্ঞ করে পিতা মাতার আশীর্বাদ লাভ করে জ্ঞানী হও দেখবে তোমার জয় সর্বত্র বিরাজ করছে ও তোমার আসন হবে সর্ব উচ্চে এতে কোন ভুল নাই।
   জননীর সাথে জন্মভূমির সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পিতার সাথে ধর্মজ্ঞানের মাধ্যমে স্বর্গসুখ ও ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক গভীরভাবে জড়িত। পৃথিবীর বুকে কোন কাজ করতে গেলে তাই মায়ের আশীর্বাদ আগে প্রয়োজন। মা সন্তানকে যে আশীর্বাদ দিবে সন্তান সেই আশীর্বাদের অধিকারী হবে। পার্থিব জগতের সুখ- স্বাচ্ছন্দ মাতৃ শক্তি বলে সন্তান লাভ করে থাকে। পিতার শক্তি বলে সন্তান ধর্মজ্ঞান লাভ করে ঈশ্বরের শক্তির সাথে যুক্ত হয়, কারণ পিতার মন বা বীজ থেকেই সন্তানের জন্ম। সেই মন বা বীজ পিতা ঈশ্বরের নিকট থেকে জন্মসুত্রে লাভ করে আসছে সৃষ্টির প্রারম্ভকাল থেকে। তাই সৃষ্টি রহস্যে ও বেদ যজ্ঞের বেদিতে পিতা-মাতার স্থান সর্ব উচ্চে।  হরি ওঁ তৎ সৎ।

Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide