[ বেদ যজ্ঞ করে তোমরা সবায় অন্ধকার কারাগার থেকে মুক্ত হও।]
তোমরা সবায় এই পৃথিবীর অন্ধকার কারাগারে বন্দী।
তোমরা সবায় মহামায়ার মায়া- মোহ জালে আবদ্ধ থেকে নিজেদের বন্দী দশার কথা ভাবতে
পারছো না তাই কেউ নিজের আত্মিক স্বাধীনতার জন্য চিন্তা- ভাবনা করতে পারছো না।
আবদ্ধ অবস্থায় ছটপট করছো কিন্তু বন্দী কারাগার থেকে মুক্তির আবেদন পর্যন্ত করছো
না। আমার কাছে যত আবেদন আসছে তা আমি বাতিল করে দিচ্ছি কারণ সেই আবেদন বন্দী দশা
থেকে মুক্তির জন্য নয়। সেসব আবেদন আরও দীর্ঘকাল বন্দী অবস্থায় থাকার জন্য আবেদন।
কেউ পৃথিবীর অন্ধকার কারাগার থেকে মুক্ত হতে চাও না। পৃথিবীর ঊর্ধ্বে যে তোমাদের
জন্য আরও উন্নত জগৎ আছে, তা বিশ্বাস করতে পারো না। প্রথমে বিশ্বাস করতে হয়, তারপর
কল্পনা করতে হয়, তারপর বাস্তব জগতে যেতে হয়। তোমরা যদি আগেই বাস্তবকে দেখতে চাও
তবে কোনদিন তা দেখতে পাবে না। কুয়োর ব্যাঙ যেমন বিশাল সমুদ্র আছে, তা বিশ্বাস করতে
পারে না, তেমনি অন্ধকার কারাগারে বন্দী মানুষ বিশ্বাস করতে পারে না, পৃথিবীর বাইরে
মানুষের জন্যে আরও উন্নত বাসস্থান আছে। তাই অবিশ্বাস ও বিশ্বাসের দোলায় মানুষ
দুলতে থাকে। কেউ বেদ যজ্ঞ করে কিছুতেই মহামায়ার মোহজাল ছিন্ন করে আমার প্রতি
পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও জ্ঞান নিয়ে শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমার জ্ঞান- বিজ্ঞানের ঘরে আসার
জন্যে আবেদন করে না। তাই তারা যুগযুগ ধরে কালের কবলে পড়ে রূপ পরিবর্তন করে এই
অন্ধকার বন্দীশালাতেই থেকে যায়, সেই স্মৃতির কথাও মনে আনতে পারে না। তাই যতদিন না
তোমরা আমার আশ্রয়ে এসে বেদ যজ্ঞ করবে, ততদিন তোমরা পার্থিব সম্পদের মায়া –মোহজালে
আবদ্ধ হয়ে বারবার জন্ম- মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই থাকবে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ
শান্তিঃ।