বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—০৯/ ০৫/ ২০১৬
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—
বেদ যজ্ঞ করে শুভ অক্ষয় তৃতীয়ায় দেবতার উদ্দেশ্যে নিজের
জীবন করো ।
মানব জীবন দুর্লভ জীবন। এই জীবনের সাথেই
যুক্ত আছে আত্মা, যিনি চির অক্ষয়-চির অমর। এই আত্মা চার যুগের সাথে যুক্ত থেকে কর্মমুখর করে রাখেন
তাঁর কর্মভূমিকে। এই অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য লগ্নে সত্যযুগের শেষ ও ত্রেতা যুগের
আরম্ভ হয় এই পৃথিবীর বুকে মানুষকে চির অক্ষয় করে ধরে রাখার এক সহজ পন্থার মাধ্যম দিয়ে।
ব্রহ্মা- বিষ্ণু – মহেশ্বরের শক্তি নিয়ে সত্যযুগের শেষ ও ত্রেতা যুগের আরম্ভকালে
বিষ্ণু অবতার পরশুরাম রূপে আবির্ভূত হলেন।
তিনিই মানুষকে নিজের জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার পথ দেখালেন,
ক্ষত্রিয়স্বরূপ অহংকারকে বিনাশের মাধ্যম দিয়ে। তিনি মানবিকতার উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে ২১ বার এই
ধরাকে নিঃক্ষত্রিয় করে মানুষকে অহংকার মুক্ত করে বিশ্বে শান্তি- সাম্য- সত্য ও
ঐক্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনিই মানুষকে সঙ্ঘবদ্ধ করে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে নিজের
জীবনকে ঈশ্বরের উদ্দ্যশ্যে উৎসর্গ করার মধ্যে যে তাদের অক্ষয় কীর্তি যুক্ত আছে তা
ব্যক্ত করলেন এবং নিজের অহংকার বা ক্ষত্রিয় শক্তি ও তম শক্তি যা আত্মাকে অন্ধকারে
আচ্ছন্ন করে রেখেছে তা থেকে মুক্ত হয়ে অমর -অক্ষয়- অব্যয় আত্মার উপর ভর করে
সাত্ত্বিক জীবনের পথ দেখালেন। তিনি অক্ষয় তৃতীয়ার এই পুণ্য লগ্নে বিশ্বব্যাপী বেদ
যজ্ঞ করার ব্যবস্থা করে তিল তর্পণ অনুষ্ঠান করতেন। এই তিল তর্পণ অনুষ্ঠানের মাধ্যম
দিয়ে ত্রেতা যুগে মানুষ অমর অক্ষয় পদ লাভ করতেন নিজের পার্থিব জীবন দেবতার
উদ্দ্যেশে উৎসর্গ করে। যুগের বা কালের কবলে পড়ে সত্য ধামাচাপা পড়ে যায় এবং সেই
সত্যকে নিয়ে অনেক পৌরানিক গালগল্প গাঁথা হয়। কিন্তু আমাদেরকে সেই পৌরাণিক গালগল্প
থেকেই নিজের সত্য আত্মাকে উদ্ধার করতে হবে বেদ যজ্ঞের মাধ্যম দিয়ে। জয় গুরু পরশুরাম।