[ বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও জীবের মৃত্যু মানেই সংসারের বন্ধন থেকে মুক্তি
নয়।]
মানব জীবন অত্যন্ত দুর্লভ জীবন এই বুদ্ধিই অধিকাংশ
মানুষের নাই। তাই তারা এই দুর্লভ জীবন পেয়েও পরমাত্মা- পরব্রহ্মের সাথে সেতু বন্ধন
করার কোন তৎপরতা দেখায় না। সংসার সেতু বন্ধন করে জীবকে মৃত্যুর পর পুনঃ এই সংসার
চক্রেই আবদ্ধ হতে হয়। জন্ম- মৃত্যুর এই চক্র থেকে মুক্ত হয়ে চির অমরত্ব লাভ করে
জ্যোতির্ময় সুক্ষ দেহ লাভ করে পরমপিতার ঘরে থাকার ইচ্ছা নিয়ে কর্ম না করলে কিভাবে
মানুষ তা পেতে পারেন? এই সংসারের আবদ্ধ মানুষকে দেখা যায় সকলেই এই সংসারেই
চিরকালের জন্যে আবদ্ধ হয়ে থাকার জন্যে এমন কোন তৎপরতা নেই যা তারা দেখান না।
কিছুতেই এই সংসারের মোহ থেকে মুক্ত হবার জন্যে পরমপিতার সংসারের সাথে সেতু বন্ধন
করার জন্যে তিনি ডাক দিলেও সেই পথে যান না। নিজেকে এই জাগতিক সংসারের বীর কর্মী ভেবে
জীবন উৎসর্গ করেন, এমন মানুষের অভাব নেই কিন্তু কেউ নিজেকে বিশ্বমানব শিক্ষার
কর্মী ভেবে মানবাত্মার ধর্ম- কর্ম অনুসারে পরমাত্মার সাথে তাঁর ঘরে থাকার জন্যে
সেতু বন্ধন করার জন্যে প্রয়াসী হন না। ফলস্বরূপ পরমসত্য মানুষের অন্তরে আর
উদ্ভাসিত হয় না ও তারা সেই পথকে নিজেদের জীবনের পরম ও চরম পথ জেনে সেই পথে অগ্রসর
হয় না। বুদ্ধিমান কতিপয় পুরুষ এই পরম সত্য জেনে পরব্রহ্মের সাথে নিজ আত্মার সেতু
বন্ধন করে প্রত্যেক জাতির প্রতিটি প্রাণীর মধ্যেই পরমাত্মাকে প্রত্যক্ষ করে থাকেন।
এই সব দুর্লভ পুরুষ এই অস্থায়ী কর্মভূমি ও জ্ঞানপীঠে নিজেকে ও জীবকে ধরে রাখার
জন্যে সংসারসেতু স্বরূপ কোন তত্ত্বই নির্মাণ করার জন্যে প্রয়াসী হন না। তাঁরা বীর
হনূমানের ন্যায় রামেশ্বরম সেতু নির্মাণ করে চিরদিনের জন্য জন্ম- মৃত্যুর চক্র থেকে
মুক্ত হয়ে অমর হয়ে যান। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।