[বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে জীবের মধ্যেই শিবকে দর্শন করে শিবলোকে ভ্রমণ করো।]
হে দেবাদিদেব মহাদেব তোমার করুণায় আমি বেদ
যজ্ঞ করে অচ্যুত বিজ্ঞানঘন এবং শিবস্বরূপ নিজেকে উপলব্ধি করছি। আমার আর কি চাই? অন্তঃকরণের চর্বিতচর্বণপ্রয়াসে
নিজের আলোক না থাকা সত্ত্বেও সংসারকে আলোকময় চেতনাময় আনন্দময় বলে মনে হচ্ছে—সবায়কে
নিজ অন্তরের প্রেমের বাঁধনে বেঁধে রাখতে ইচ্ছে করছে—এই বিশাল অন্তঃকরণ এল কোথা
থেকে—তাহলে কি আমিই আসলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অনন্য জ্যোতিঃস্বরূপ বিষ্ণু হয়ে
বিশ্বচরাচর ব্যাপী অবস্থান করছি? আমি বেদ যজ্ঞের দ্বারা দেখতে পাচ্ছি—এই সংসারের
জড় সবকিছু স্বপ্নের মতন বিনাশ পেলে, আমি সংবিৎ-স্থিত এবং জন্মরহিত হয়ে একাই থেকে
যাই—এই অমৃতের স্বাদ পাবার পরে আমার আর কি চাই? আমি তো দেখতে পাচ্ছি—চিৎ ও জড়ের
যিনি দ্রষ্টা – তিনিই হলেন অচ্যুত জ্ঞানবিগ্রহ—তিনিই হলেন মহাদেব—তিনিই হলেন
মহাহরি। তিনিই হলেন জ্যোতিরও জ্যোতিঃ – তিনিই হলেন পরমেশ্বর—তিনিই হলেন পরব্রহ্ম
এবং সেই পরব্রহ্মই হলাম নিঃসংশয়ে আমি। তাই জীব হলেন শিব, শিব হলেন জীব। জীব হলেন
কেবলমাত্র শিব--- যেমন তুষে আবৃত ধান, তুষ ছাড়ালে কেবলমাত্র চালের দানাটি থাকে—তেমনি
জীব কর্ম শেষে সেই সদাশিবে লীন হয়ে যান। এখন জীব হলেন সাময়িকভাবে পাশবদ্ধ আর
সদাশিব হলেন পাশমুক্ত। হে মহাদেব-- আমি যেন সদায় বেদ যজ্ঞ করে চলি—আমি যেন সদায়
বিষ্ণুকে শিবময় এবং শিবকে বিষ্ণুময় দেখি—এই অভেদ দর্শনই হল বেদদর্শন তা যেন আমরা
ভুলে না যায় বেদ যজ্ঞ করার কালে। হরি ওঁ তৎ সৎ।