[ বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও জ্ঞানবানের ওষ্ঠাধারে
প্রজ্ঞা পাওয়া যায়, তারা জ্ঞান সঞ্চয় করে।]
জ্ঞানীর সান্নিধ্য বড়ো দুর্লভ। তাদের মুখ থেকে
যা উচ্চারিত হয় তাই বেদবাক্য। তাদের ওষ্ঠাধারে যে প্রজ্ঞা পাওয়া যায় তা সমাজের
সমস্ত অশুভশক্তিকে বিনাশ করে। তারা ধন সম্পদ কোনো কিছুই সঞ্চয় করেনা—তাদের সঞ্চয়
মানবজাতির মঙ্গলের জন্য সত্যজ্ঞান। এই
জ্ঞান সঞ্চয় করাতেই তাদের আনন্দ। তারা স্রষ্টার প্রিয়পাত্র হয়ে তাঁর সাথে এক হয়ে
কেবল তাঁর জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘর থেকে জ্ঞান নিয়ে তা বিতরণ করেন তাঁর নির্দেশ মান্য
করে। জ্ঞানবানের ওষ্ঠাধার থেকে কোনো মিথ্যা বা ক্ষতিকারক কথা উচ্চারিত হয়না। তাদের
ভাণ্ডার থেকে যা বের হয়ে আসে তা সবই জগতের সকলের মঙ্গলের জন্যে। এ সব জ্ঞানীর
সান্নিধ্যে যারা থাকে, তারাও প্রজ্ঞা লাভ করে মহাজ্ঞানী হয়ে ওঠে ও পবিত্রসত্তার
সাথে মিলিত হবার সৌভাগ্য লাভ করে। তারা জ্ঞানের জগতে বিচরণ করে ব্রহ্মাণ্ডের ঊনপঞ্চাশটি
জীবন্ত পৃথিবী ও অদৃশ্য সাতটি জগতকে দেখতে পেয়ে সর্বত্র ভ্রমণের ছাড়পত্র পান
ঈশ্বরের নিকট থেকে দিব্য দৃষ্টি নিয়ে। তাদের পার্থিব দেহের প্রতি কোনও লক্ষ্য
থাকেনা- সুক্ষ দেহ ধারণ করে যাকে বলা হয় জ্ঞান দেহ তা ধারণ করে চিন্তা করা মাত্র
তথায় উপস্থিত হয়ে জ্ঞান সঞ্চয় করে তা সকলের মঙ্গলের জন্য বিতরণ করে। জ্ঞানীরাই
একমাত্র দেহাতীত হয়ে জ্ঞান জগতে প্রবেশের ছাড়পত্র পেয়ে থাকে তাদের ঈশ্বরের নিকট
থেকে। তাদের দেহ জ্ঞানবৃক্ষ, সেখান থেকে যে ফল পড়ে তাই অমৃতফল। সেই অমৃতফল যে
ভক্ষন করে সেই অমর হয়ে যায়। তোমরা সকলেই বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী তাই তোমাদের ওষ্ঠাধারে সর্বদা প্রজ্ঞা বিরাজ করছে জেনে ছোট
ছোট জ্ঞানের কথা গুলি নিয়ে আলোচনা করো সর্বত্র বিশ্বমানব শিক্ষা গবেষণা কেন্দ্র
গড়ে তুলে। বার বার একই কথা বিভিন্ন ভাবে আলোচনার মাধ্যমেই তোমাদের অন্তরে জ্ঞানের
বাতি জ্বলে উঠবে। সত্যকে সুন্দর রূপ দাও। সত্যের
উপাসক হও। সত্যই হচ্ছে তোমার প্রজ্ঞা। সত্যই হচ্ছে তোমাদের জীবনের পোশাক। সত্যই
হচ্ছে তোমাদের জীবনের পবিত্রতা। সত্যকে সঞ্চয় করে কাজে লাগাও। সত্যই হচ্ছে
বিজ্ঞান। বিজ্ঞানকে অস্বীকার কোরোনা। তোমাদের ঈশ্বর বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই
তাঁর সৃষ্টিকে ধরে রেখেছেন, তা হৃদয় মন্দিরে প্রদীপ জ্বেলে দেখে নাও ও জেনে নাও,
তিনিই হচ্ছেন মহাবিজ্ঞানী।