[বিশ্বমানব শিক্ষা হচ্ছে মানুষের অন্তরের
সহজ-সরল পবিত্র জ্ঞান]
জ্ঞানীদের সহজে ধরা যায় না। সাধারণ মানুষ তো দূরে থাক স্বয়ং
দেবতারাও তাঁদের চিনতে পারেন না। একমাত্র ঈশ্বরের পাঠানো কয়েকজন দূত তাদের সনাক্ত
করেন। সেই সাথে তাঁরাই কেবল দেখতে পান তাঁর অন্তরের আত্মা সদাই পরমাত্মার সাথে
যুক্ত।
পার্থিব জগতের বোঝা যত মাথায় চাপাবে—তত মাথা
যন্ত্রণা বৃদ্ধি পাবে। বোঝা হালকা করে চলতে থাকো কোনো যন্ত্রণা পাবে না। আবর্জনার
বোঝা থেকে নিজেকে মুক্ত করো—জ্ঞানের জগতে ফিরে যাবার জন্য।
তুমি নিজেকে চিনতে না পারলে আমাকে চিনবে কোথা
থেকে? আমাকে নিজের মধ্যে খোঁজ কর—নিশ্চয় দেখতে পাবে। জ্ঞানী আমার অতি প্রিয়—তাই
আমার জ্ঞান বৃক্ষের বীজ তোমার অন্তরে রয়েছে –তাকে বৃক্ষে পরিণত কর প্রকৃত চাষি
হয়ে। আমাকে নিশ্চয় দেখতে পাবে।
শক্তির সাধনা করে শক্তি বাড়াও। জ্ঞান শক্তির
বীজ প্রত্যেক মানুষের হৃদয় মন্দিরে বিরাজ করছে। যার মন্দিরে যেমন বৃক্ষ হবে—তার
মন্দিরের বৃক্ষে তেমন ফল ফলবে।তোমার হৃদয় মন্দিরের থেকে জাগ্রত মন্দির আর দ্বিতীয়
নেই।
সত্যকে জানার জন্যে ছটপট কর। সত্যের প্রকাশ
ঘটবে তোমার অন্তরে। সত্যই হচ্ছে জ্ঞান—জ্ঞানই হচ্ছে জ্যোতি—জ্যোতিই হচ্ছে তোমার
ঈশ্বর।
মহাশুন্য থেকে সব সৃষ্টি। মহাশুন্যেই সব আবার
বিলীন হচ্ছে।শুন্যতত্ত্ব যিনি জানেন তিনি বিজ্ঞানের ঊর্ধ্বে উঠে মহাজ্যোতির লীলা
দিব্য চক্ষুতে দর্শন করেন।
জ্ঞানীরা কোন কাজ নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন না—কোন বিষয়
নিয়ে তর্কও করেন না। তাঁরা জানেন ঈশ্বরের ইচ্ছায় যে কাজ হবার, তা হবেই। মাঝ পথে
সেই কাজ নিয়ে অজ্ঞানীরা বাড়াবাড়ি ও তর্ক বিতর্ক সাজিয়ে মজলিস করবেই। তা না করলে
অভিনয় জমবে না।
রঙ্গমঞ্চে যাকে যে পাঠ দেওয়া হয়েছে – তা করতেই
হবে। যারা জ্ঞানী তারা কেবল পাঠ করে ঈশ্বরের জন্য এবং কেবল তাঁর প্রশংসা ছাড়া
অভিনয় মঞ্চে কিছুই দেখেন না, কিছুই শোনেন না ও কিছুই করেন না।
জ্ঞানীরা দেহের মধ্যে অবস্থান করেও দেহাতীত এবং
গুনের মধ্যে অবস্থান করেও গুণাতীত। তাদেরকে পার্থিব জগতের কোন মায়া-মোহ স্পর্শ
করতে পারে না।যদিও তারা সাধারন মানুষের ন্যায় অভিনয় করে যান এই রঙ্গমঞ্চে কিছুতেই
নিজের স্বরূপ প্রকাশ করেন না।
প্রাণহীন শিক্ষায় অমৃত থাকে না—তাই সেই শিক্ষা মানুষকে
অহংকারী ও স্বার্থপর করে তুলে। প্রাণবন্ত শিক্ষায় অমৃতরস ঝড়ে—তাই সেই শিক্ষা
মানুষকে নম্র ভদ্র ও দেশপ্রেমিক করে তুলে।
যে কোন মানুষ মাত্র তিন বছর শিক্ষার অমৃতময়
প্রদেশে অবস্থান করলে সেই মানুষ কোনদিন স্বার্থপর হতে পারে না ও জন্মভূমির কোন
ক্ষতি করতে পারে না। অথচ দেখা যাচ্ছে ২০ বছর শিক্ষা জগতে থেকেও মানুষের অন্তরে
সত্য জ্ঞানের জাগরণ ঘটছে না ও মানুষ দেশ প্রেমিক হয়ে উঠছে না।