[মানুষকে শিক্ষিত—জ্ঞানী—বইপ্রেমী
করে তুলতে সক্ষম কবি ও সাহিত্যিক]
বই লেখা হয় মানুষকে জ্ঞানী করে তোলার জন্যে।
তাই যারা বই পড়তে ভালোবাসে তাদের কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটে দ্রুত। কল্পনা শক্তির
দ্বারা-ই মানুষকে বাস্তব রচনা করতে হয়। বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের স্মৃতিশক্তিরও বৃদ্ধি
পায়। কল্পনাশক্তি ও স্মৃতিশক্তির বিকাশ ঘটিয়ে মানুষ ধীরে ধীরে শিক্ষিত ও জ্ঞানী
হয়ে উঠে। মানব সমাজকে শিক্ষিত ও জ্ঞানী করে তোলার জন্য কবি—সাহিত্যিক ও লেখকের
ভূমিকা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা সমাজকে তাঁদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দ্বারা যে ভাবে
গড়ে তুলবেন মানব সমাজ সেই ভাবে গড়ে উঠবে। শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা অনুপ্রবেশ
করতে দেওয়া উচিত নয়। শিক্ষাক্ষেত্র হবে পবিত্র ও নির্মল। এখানে গুরু-শিষ্য সম্পর্ক
যত মধুর হবে এবং শ্রদ্ধা—প্রেম দ্বারা পূর্ণ থাকবে তত মানব সমাজ জ্ঞানী লোক দ্বারা
পূর্ণ হবে। তাই শিক্ষার পাঠক্রম মুক্ত ও উদার প্রাণের কবি—সাহিত্যিক—বৈজ্ঞানিকদের
দ্বারা নির্বাচিত হওয়া উচিত। পাঠক্রমে ও শিক্ষালয়ে বেনোজল প্রবেশ করলে শিক্ষা
নিজস্ব রূপ হারিয়ে ফেলবে। বর্তমানে লাইব্রেরীর অভাব নাই—বই-এর অভাব নেই—বইমেলার
মাধ্যমে প্রচুর বই বিক্রি হচ্ছে—কিন্তূ দেখা যাচ্ছে পাঠকের অভাব। বই কেনার আগ্রহ
যত দেখা যায়, বই পড়ার আগ্রহ তেমন নেই বললেই চলে। বিদ্যালয়ে—বিদ্যালয়ে
ছাত্র-ছাত্রীদের সরকার থেকে বই দেওয়া হয়—বই কেনার টাকা দেওয়া হয়। অধিকাংশ
ছেলে-মেয়ে বইগুলি না পড়ে কেবল নোট পড়ে ও কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে গৃহ-
শিক্ষকেরদের পরামর্শ মতো। এই সব কারণে তাদের কল্পনা শক্তি, চিন্তা শক্তি,
স্মৃতিশক্তির বিকাশ ঘটে না। তাদের গ্রহণ করার শক্তি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি না পেয়ে
হ্রাস পে্তে থাকে। যদি এই সব ছেলেকেই জাতীয় জ্ঞান, মানবিক মুল্যবোধ, নৈতিক জ্ঞান ও
আধ্যাত্মিক জ্ঞানের শিক্ষা দেওয়ার পর – তথ্য জ্ঞানের আসরে আনা হতো তবে কিন্তূ
তাদের কল্পনা ও চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটতো। লেখক—কবি—সাহিত্যিক—দার্শনিক –বৈজ্ঞানিক সকলে মিলে যখন এক মঞ্চে এসে মানুষ তৈরীর কারিগর
হবেন—তখনি সার্থক রূপ পাবে শিক্ষাক্ষেত্র।
+