Home » » স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশ চিন্তা

স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশ চিন্তা



[স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশ চিন্তায় সবায় আগে মানুষ হও তাহলেই সারা বিশ্বে শান্তি- ঐক্য- সাম্যের প্রতিষ্ঠা হবেই হবে।]
স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন এই পৃথিবীর মানুষের মুক্তির দূত। তাঁর চিন্তাধারাতেই এই ভারতবাসী নূতন সূর্য দেখেছে—নূতন আলো পেয়ে তখন যুব শক্তি জেগে উঠেছিল ভারতবাসীকে বন্দিশালা থেকে মুক্ত করার জন্যে। তাঁর এই স্বদেশ চিন্তা এখনও সবার হৃদয়ে নূতন সূর্য হয়ে আলো দান করে চলেছে—একবার যে এই মন্ত্র শুনবে- সেই জেগে উঠবে- বিশাল শক্তি নিয়ে। সেই মন্ত্র হচ্ছে—হে ভারত- এই পরাণুবাদ, পরাণুকরণ, পরামুখাপেক্ষা, এই দাসসুলভ দুর্বলতা, এই ঘৃণিত জঘন্য নিষ্ঠুরতা এইমাত্র সম্বলে তুমি উচ্চাধিকার লাভ করিবে? এই লজ্জাকর কাপুরুষতা সহায়ে তুমি বীরভোগ্যা স্বাধীনতা লাভ করিবে? হে ভারত –ভুলিও না- তোমার নারীজাতির আদর্শ সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী, ভুলিও না তোমার উপাস্য উমানাথ সর্বত্যাগী শঙ্কর, ভুলিও না তোমার ধন, তোমার জীবন, ইন্দ্রিয় সুখের—নিজের ব্যক্তিগত সুখের জন্য নহে, ভুলিও না- তুমি জন্ম হইতেই মায়ের জন্য বলি প্রদত্ত, ভুলিও না- তোমার সমাজ  সে বিরাট মহামায়ার ছায়ামাত্র, ভুলিও না- নীচজাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ,মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই। হে বীর সাহস অবলম্বন কর, সদর্পে বল- আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই। বল- মূর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই; তুমিও কটিমাত্র বস্ত্রাবৃত হইয়া সদর্পে ডাকিয়া বল- ভারতবাসী আমার ভাই; ভারতবাসী আমার প্রাণ; ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারাণসী। বল ভাই- ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বর্গ, ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ, আর বল, দিনরাত, হে গৌরিনাথ, হে জগদম্বে, আমায় মনুষ্যত্ব দাও, মা, আমার দুর্বলতা, কাপুরুষতা দূর কর, আমায় মানুষ কর।

Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide