[মিথ্যার আশ্রয়ে
সাময়িক লাভ হলেও তা ভবিষ্যতের জন্য অভিশাপ]
মানুষ মিথ্যা কথা বলতে কোনো লজ্জাবোধ করে না।
অধিকাংশ মানুষ মিথ্যার আশ্রয় গ্রহন করে সাময়িক কিছু লাভ করতে চায়। কেন মিথ্যার
আশ্রয় নেয়? দেখা যায় মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। আশা আকাংখা পূরণের জন্য তারা
মিথ্যার আশ্রয় নেয়। সাময়িক আশা পূরণ হলেও সেই মিথ্যার বোঝা তাকে চিরকাল বইতে হয়
আবর্জনা স্বরূপ। এই ভাবে প্রতিনিয়ত আবর্জনার স্তূপ জমতে জমতে শেষে জীবনটা আবর্জনার
স্তূপে পূর্ণ হয়ে যায়। সেই স্তূপ থেকে ফুটে বের হবার আর কোনও পথ থাকে না। মানুষ
আবর্জনা থেকে মুক্ত হয়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয়। জন্মের পর থেকে একটার পর একটা মিথ্যা
আবরণ তার জীবনের সাথে জড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে যে নামকরণটা করা হয় তা মিথ্যা
নামকরণ- এই নামের বোঝা ত্যাগ করে মুক্ত হবার আর উপায় থাকে না- যতদিন সে বাঁচে এই
পৃথিবীর বুকে। এখানেই মানুষের জ্ঞান আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপর একটা মিথ্যা জাত ও
ধর্মের আবরণ চাপিয়ে আরও আবদ্ধ করে দেওয়া হয় মানুষের জ্ঞানকে। কীভাবে মুক্ত চিন্তা
করবে মানুস? মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, তাই সামাজিক মিথ্যা বন্ধন কত ভাবে তার জীবনে
বেঁধে দেওয়া হয়? কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা তা যাচাই করতেই জীবন শেষ হয়ে যায়।
সুনাম-বদনাম এমনভাবে নামের সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয়, যে মানুষ ভয়ে সত্যকে সন্ধান
করার সাহস দেখাতে পারে না। মানুষ মিথ্যাকে যতটা না ভয় করে, তার থেকে বেশী ভয় করে
সত্যকে- তাই সত্যের থেকে মিথ্যাকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকার দিকেই ধাবিত হয়ে অভিশাপের
বোঝা বাড়াতে থাকে।একটু চিন্তা করলেই মানুষের চেতনা জাগ্রত হয়।চেতনা জাগ্রত হলে
মানুষ কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিতে পারে না। বড়ো বড়ো বই পড়ে ডিগ্রি লাভ করা মানুষেরাও
এই মিথ্যার জগত থেকে মুক্ত নন। তারাও সত্যকে মেনে নিয়ে সত্যের পথে সাধনা বা গবেষণা
করে না। যদি করতেন তবে মানব সমাজ স্বর্গরাজ্যে পরিণত হত। যারা নিজেকে বিশ্বাস করে
নিজেকে জানতে পারে- তাদের-ই কেবল সত্য মিথ্যা বোধ অন্তরে জাগ্রত হয় ও সত্যকে জানতে
পারে।