Home » » বেদ যজ্ঞ করে একটার পর একটা আবরণ খুলে নিজেকে মুক্ত আত্মা রূপে প্রকাশ করো

বেদ যজ্ঞ করে একটার পর একটা আবরণ খুলে নিজেকে মুক্ত আত্মা রূপে প্রকাশ করো

[ বেদ যজ্ঞ করে একটার পর একটা আবরণ খুলে নিজেকে মুক্ত আত্মা রূপে প্রকাশ করো।]
এই জগতটা হচ্ছে একটা ব্যায়ামাগার। জীবাত্মা এখানে নানান কসরৎ করে নিজেকে ক্রমশঃ দেবত্বে উন্নীত করছে। অতএব এখানে সবকিছুর মূল্যই নির্ধারিত হবে তার ভিতর কতটা দেবত্বের প্রকাশ হয়েছে তার উপর। মানুষের মধ্যে সেই দেবত্বের প্রকাশকেই সভ্যতা বলে। আমাদের এই দেবত্বই অনন্ত অস্তিত্ব, অনন্ত জ্ঞান এবং অনন্ত আনন্দের ভাণ্ডার। এই দেবত্ব যত বিকশিত এবং প্রকাশিত হতে থাকে, ততই আমরা শ্বাশ্বত সুখ অনুভব করি এবং পরম জ্ঞান আমাদের করায়ত্ত হয়। ইচ্ছা শক্তির দৃঢ়তা, ব্যক্তিত্ব বিকাশের প্রাণবস্তু; আমাদের দিব্য কোরকটি যেন পাঁচটি আবরণে ঢাকা।
১] দৈহিক আবরণ – এই আবরণটি আমাদের দেহ ও ইন্দ্রিয়গুলিকে নিয়ে গঠিত। তাই দেহতত্বের জ্ঞান লাভ করে এই আবরণ থেকে আমাদেরকে প্রথমে মুক্ত হতে হবে।
২] প্রাণময় আবরণ—এই প্রাণময় আবরণ থেকে মুক্ত হতে হবে আমাদের খাদ্য পরিপাক ক্রিয়া, রক্ত সঞ্চালন, শ্বাসপ্রশ্বাস এবং অন্যান্য দৈহিক ক্রিয়াগুলি কিভাবে সম্পন্ন হয়ে চলেছে তা জেনে।
৩] মনোময় আবরণ—যা চিন্তা, অনুভব এবং আবেগের মতো মানসিক কাজগুলি করে। এই কাজগুলি স্বভাবিক পদ্ধতিতে কিভাবে হয়ে চলেছে তা জেনে এই মনোময় আবরণ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে।
৪] বিজ্ঞানময় আবরন--- যার বৈশিষ্ট্য কোনও কিছু নিশ্চয়ভাবে নির্ধারণ করা। মানুষের এই ক্ষমতা আছে। এই আবরণটি আবার বিচারশক্তি, ইচ্ছাশক্তির আশ্রয় হয়ে মানুষকে শুভ ও অশুভ দিকে চালিত করে।
৫] আনন্দময় আবরণ – এই অবস্থাই মানুষকে চরম আনন্দময় জগতে ধারণ করে রাখে। মহাসমাধি বা স্বপ্নহীন গভীর নিদ্রার সময় এই আনন্দ অনুভুত হয়।
এই পাঁচটি আবরণকে উন্মোচন করে মানুষকে আত্মজ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে নিজেকে পরমাত্মার সাথে যুক্ত অবস্থায় স্থির থাকতে হয় । মানুষ বেদ যজ্ঞ করে একটার পর একটা আবরণ থেকে মুক্ত হয়ে দেবত্বে উন্নীত হতে পারে।

Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide