[ বেদ যজ্ঞ করে বেদের সত্য রূপ উদ্ঘাটন করো।]
মানুষের হৃদয়ে ঈশ্বরের বাস। তিনি মানব হৃদয়ে
অবস্থান থেকে হৃদয় বেদ খুলে দেন। তিনি মানব হৃদয়ে জাগ্রত হয়ে যে পবিত্র জ্ঞানের
প্রকাশ ঘটান তাই বেদ। বেদ হচ্ছে জ্ঞান- বেদ হচ্ছে সত্য – বেদ হচ্ছে ঈশ্বর। বেদ
হচ্ছে ঈশ্বরের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘর। এই বেদকে কোন গ্রন্থের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখা
মানুষের সাধ্যাতীত। ঈশ্বর মানুষের ও তাঁর সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য অনুগ্রহ করে যেটুকু
প্রকাশ করেছেন- তাই মানুষ ধারণ করতে সক্ষম নয়। বেদের সামান্য অংশ যদি কোন মানুষ ধারণ
করে রাখতে সক্ষম হয়, তবেই তার জন্ম সার্থক হয়ে উঠবে।
বেদের অগ্নি হচ্ছে জ্ঞান। এই জ্ঞান যে কোন অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে সক্ষম ।
যারা জ্ঞানের উপাসনা করে তারাই অগ্নির ন্যায় তেজে নিজ আত্মাকে জাগ্রত করতে সক্ষম
হয়। সর্বব্যাপী এই আত্মার উপাসনা করে তারা ঈশ্বরের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘরের সাথে
যুক্ত হয়ে আনন্দলোকে অবস্থান করে।
বেদ, উপনিষদ,গীতা ইত্যাদি গ্রন্থে কোন ধর্মীয় সংকীর্ণতা স্থান পায় নি।
সর্বত্র মানবাত্মার জয়গান করা হয়েছে ও ঈশ্বরের সৃষ্টির প্রশংসা করা হয়েছে। মানুষকে
অজ্ঞানের কারাগার থেকে মুক্ত করে আলোর প্রদেশে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মানুষকে জন্ম- মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত করে এক ঈশ্বরের আলোয় নিয়ে যাবার ব্যবস্থা
করা হয়েছে।
নিজ আত্মার জাগরণ না ঘটাতে পারলে কেউ রক্ত
মাংসের দেহ থেকে নিজেকে পৃথক দেখতে সক্ষম নয়। নিজেকে আত্মা রূপে দেখতে না পেলে কেউ
এক ব্রহ্মে বিশ্বাসী হতে পারে না। আত্মা হয়ে পরমাত্মার সাথে মিলিত না হলে কেউ একের
রহস্য জানতে সক্ষম হয় না। তাই মানুষের সত্য উদ্ঘাটনের একমাত্র পথ হচ্ছে বেদ যজ্ঞ
করে জীবনকে বেদময় করে তোলা।