[ বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও অনন্ত প্রেমই মানুষের অসীম শক্তির ঘর।]
ঈশ্বর –আল্লা- গড- ভগবানের বানী হচ্ছে যেমন হচ্ছে--- যেমন করে হোক তুমি
আমার সান্নিধ্য লাভ কর। আমার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হও। আমাকে লাভ করলেই সত্যকে জেনে
তুমিই সসীম থেকে অসীম হয়ে যাবে। তোমার মধ্যে অনন্ত সম্ভাবনা রয়েছে, সেটাকে তুমি
ফূটিয়ে তোলো। বৈজ্ঞানিকদের সামনে- সমস্ত চিন্তাশীল মানুষের কাছে আজ একটা প্রশ্ন;
এই যে সভ্যতা এর ভবিষ্যৎ কি? এই বৈজ্ঞানিক সভ্যতা, কি এর লক্ষ্য? আমরা নতুন নতুন
যন্ত্র আবিষ্কার করছি, বড় বড় অট্টালিকা তৈরী করছি, এক গ্রহ থেকে আর এক গ্রহে ছুটে
যাচ্ছি—এ সব হল বাইরের ঐশ্বর্য, বাইরের সম্পদ। বাইরের ঐশ্বর্য থাকুক ক্ষতি নাই।
স্বেচ্ছায় দারিদ্র্য বরণ করার মধ্যে কোন গৌরব নেই- কিন্তু সঙ্গে যদি অন্তরের
ঐশ্বর্য যোগ না হয়- তাহলে সব বৃথা হয়ে যাবে। বিজ্ঞানের সাহায্যে মানুষ অসাধ্য সাধন
করছে—খুব ভাল কথা। কিন্তু প্রকৃত বীর হচ্ছে সেই যে নিজের প্রবৃতিকে জয় করতে পারে।
ভিতরের শত্রুকে যে জয় করতে পারে সে-ই সর্বশ্রেষ্ঠ বীর। তাই খোঁজ কর নিজ অন্তঃপুরে
সেই বীর সত্তাকে। নিজের অন্তঃপুরেই সব রয়েছে, সেই দিকে তাকাও। আমরা সবাই যদি একটু
ভিতরে খুঁজি – অন্তরের দিকে দৃষ্টি ফেলি তবে দেখবো, সেখানে রয়েছে প্রেম- সেখানে
রয়েছে পবিত্রতা- সেখানে রয়েছে মৈত্রী, সৌহার্দ, জ্ঞান, ঐক্য উদারতা। এই সম্পদ যদি
আমরা লাভ করি, এ রকম যদি হয় যে- আমাদের বাইরেও প্রাচুর্য আছে সেইসাথে ভেতরেও
প্রাচুর্য আছে তাহলে এই সভ্যতার ভবিষ্যৎ নিরাপদ। বিজ্ঞানের সাথে যদি ধর্ম –কর্মের
সংযোগ হয় তাহলেই এই সভ্যতা নিরাপদ। মানুষ অর্থাৎ মান- হুঁশ – এই হুঁশ যুক্ত মানুষ
, চৈতন্য যুক্ত মানুষ, অর্থাৎ যে মানুষ ঈশ্বর – আত্মা- জ্ঞানের দিকে এগিয়ে যাবে,
চৈতন্য যুক্ত হবে, ঈশ্বর স্বরূপ হবে এবং ব্রহ্ম বা আল্লা বা গড স্বরূপ হবে। তা যদি
না হয়, মানুষ যদি অসৎ ও অজ্ঞানী হয়, স্বার্থপর হয়, নীতিহীন হয়—তাহলে এই ঐশ্বর্য
বৃথা, বড় বড় অট্টালিকা বৃথা—সব বৃথা। এই সভ্যতা তাহলে টিকবে না। তাই এই সভ্যতাকে
টিকিয়ে রাখার জন্য তোমাদের হৃদয়ের অসীম শক্তিকে জাগ্রত করে ------- সকল মানুষকে
মানুষ হবার জন্যে ডাক দাও—সকল মানুষকে সৎ ও কল্যাণের পথে ডাক দিয়ে সংঘবদ্ধ কর। সকল
মানুষকে বিশ্বমানব শিক্ষার মঞ্চে ডাক দাও ও মানব সভ্যতাকে পৃথিবীর বুকে বাচিয়ে
রাখো বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে।