বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—০৯/ ০৯/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা*
মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞ করেই জানতে হবে এই ধরায় দেবতাদের
উপস্থিতি ও কার্যকলাপ অনাদি অনন্তকাল ধরে চলছে।]
বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে দেবতাদের সন্তুষ্ট করেই
মানুষকে দেবতা হতে হয়। এই সুন্দর ও শক্তিশালী প্রক্রিয়া অনাদি অনন্তকাল ধরে বেদের
ধারা মেনে মানব সমাজে চলে আসছে। এই বেদ
যজ্ঞের ধারা বলেই আমরা শিব ও পার্বতীকে নিজেদের ঘরের দেবতা বলেই জানি। মা উমা তো
জেনো আমাদের সবার ঘরের মেয়ে। আমরা দেখতে
পাই তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠানে সকল বেদবিধিই পালন করা হল। গিরিরাজ হিমালয় হস্তে কুশ
ধারণ করে ও কন্যার হস্ত ধারণ করে তাঁকে ভবানী অর্থাৎ শ্রীশংকরভার্যা জ্ঞানে ভগবান
শ্রীশংকরের হস্তে সমর্পণ করলেন। দেব- দেবতাদের উপস্থিতিতে মহাধুমধাম করে বেদবিধি অনুসারে
বিয়ে সম্পূর্ণ হলো। মা মেনকা পার্বতীকে বুকে ধারণ করে সৎ উপদেশ দান করে বললেন—হে
পার্বতী; ভগবান শ্রীশংকরের চরণে সতত সেবাপুজায় নিত্যযুক্ত থাকবে, এটিই শ্রেষ্ঠ
নারীধর্ম। নারীর জন্য পতিদেবতাই একমাত্র দেবতা হয়ে থাকেন। আমাদের শিব- দুর্গার
বিয়ে কোন অনাদি অনন্তকাল ধরে চলে আসছে তা কেউ জানেন না। এই শিব- দুর্গায় বিয়ের
যজ্ঞে গণেশের পূজা করছেন, আবার সেই গণেশকেই আমরা তাঁদের পুত্র রূপে দেখতে পাচ্ছি।
এই যে অনন্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ডে অনন্ত কোটি শিব- দুর্গার লীলা খেলা চলছে এ রহস্য কে
জানবে? তাই আমাদের জানার একটাই পথ বেদ দেখিয়ে দিয়েছেন যত্র জীব তত্র শিব, এই
তত্ত্বে বিশ্বাস দৃঢ় করে নিজেকে দেবতারূপে জানো—শিব রূপে জানো—মা পার্বতী রূপে
জানো। তাহলেই দেখতে পাবে অনন্তকাল ধরেই মানব দেহ ধারণ করে দেবতাদের উপস্থিতি এই
ধরার বুকে ঘটে চলেছে। আমরা সনাতন পন্থীরা আমাদের ছেলে- মেয়ের বিয়েতে সমস্ত দেব-
দেবতার উপস্থিতি অনুভব করি—আমরা ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে হর- গৌরির মিলন ঘটায়। বৈদিক
সমস্ত মন্ত্র উচ্চারণ করা হয় শিব- দুর্গার বিয়েতে যে মন্ত্র গিরিরাজ হিমায়ল
উচ্চারণ করে উমাকে শিবের হাতে সম্প্রদান করেছিলেন সেই মন্ত্র উচ্চারণ করে। আমাদের
পুত্র- কন্যাও সেই দিন বিয়ের যজ্ঞ- বেদিতে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে শিব- পার্বতীর
পদ অলঙ্কৃত করেন। সেই বিয়ের আসরে স্বর্গ থেকে বৈদিক মন্ত্র বলে সমস্ত দেব- দেবতা
হর- পার্বতীর বিয়েতে উপস্থিত হন ও প্রাণভরে তাঁদেরকে আশীর্বাদ করেন। হরি ওঁ তৎ সৎ।