বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—০৬/ ০৯/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা*
মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞ করে সকল স্বার্থভাবনা বিসর্জন দিয়ে
ভারতীয় আধ্যাত্মিকবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে দেশের স্বার্থে।]
ভারতের কল্যাণ, ভারতবাসীর মুক্তি বেদবাণীর
মধ্যেই নিহিত আছে। এই সত্য জেনেই বেদ যজ্ঞ করতে হবে এবং পরমসত্যের উদঘাটন করতে হবে
ভারতবাসীর কল্যাণের জন্য। এই বেদের আজ্ঞা পালন করেই বৈদিক ঋষিরা সকলকে
ব্রহ্মগায়ত্রী ধ্যান করার জন্য আহ্বান করতেন। ‘ধীমহি’ অর্থে এস, আমরা সকলে মিলে এক
মন্ত্রে ধ্যান বা চিন্তা করি জগতের সবার কল্যাণের জন্য। এই ব্রহ্মগায়ত্রী মন্ত্রের
উপরই ভারতীয় আধ্যাত্মিক সাম্যবাদের ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল, যা এখনো ভারতের মাটিতে
জীবন্ত হয়েই রয়েছে। যা বিশ্বের কোন শাস্ত্র গ্রন্থে ধ্বনিত হয়নি, তা ঋগ্বেদের শেষ
সুক্তের শেষ মন্ত্রে জাতিধর্ম নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানবের তরে ভারতীয় ঋষির
অন্তর থেকে শুভেচ্ছাবাণী ধ্বনিত হয়েছে। ‘সমানী ব আকুতিঃ’ – তোমাদের আশা আকাঙ্ক্ষা
অভিলাষ অভিন্ন হক, এক হক। ‘ সমানা হৃদয়ানি বঃ’—অর্থাৎ তোমাদের হৃদয়, হৃদয়ের ভাব-
ভাবনা এক হক। ‘ সমানমস্তু বো মনঃ’ – তোমাদের মন, মনের গতি প্রকৃতি এক হক। আমাদের
এক হয়ে একসাথে থাকার পরম সম্পদ আমাদের হৃদয়েই রয়েছে। তবে কেন আমরা পারব না এক
সঙ্গে চলতে—কেন আমরা পারব না এক কণ্ঠে কথা বলতে—কেন আমরা পারব না এক মন হয়ে চিন্তা
করতে? ভারতবাসীর তপস্যা বেদকে নিয়ে – আমরা যত বেদের ঋষিদের আহ্বানকে উপেক্ষা করবো
ততই আমাদের একতাকে আমরা নিজেরাই ভঙ্গ করে দেশের সর্বনাশ জাতির সর্বনাশ ডেকে আনবো।
সকলের আত্মার আত্মা পরমাত্মা। পরমাত্মার যোগে সকলের সাথে যোগসাধন বা আত্মিক
সম্পর্ক গড়ে তোলা ভারতের অধ্যাত্ম সাধনার লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে স্থির থেকেই ভারতকে
শক্তিশালী ভারতবর্ষ রূপে গড়ে তোলার আহ্বান এখনো দিয়ে চলেছে ঋষিরা – এই সত্য যেন
আমরা ভুলে না যায়। জয় বেদ যজ্ঞের জয়।
