বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৬/ ০৯/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা*
মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞের তপস্যার বলেই দাম্ভিকের শাসন যন্ত্র
ভেঙ্গে ফেলতে হবে ও তার দম্ভ মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।]
আমরা রামায়ণ পাঠ করলেই দেখতে পাবো শ্রীরামচন্দ্র
বানরসেনা নিয়েই এক প্রবল প্রতাপশালী, অভিমানী, বস্তুবিদ্যায় পারদর্শী, রাবণ নামক
রাক্ষসকে বধ করলেন। রাবণের কোনোকিছুর অভাব ছিল না। তামসিক ও রাজসিক তপস্যা বলে
তিনি স্বর্গের দেবতাদেরকেও পরাস্ত করেন। নিজের মাথা কেটে শিবযজ্ঞে আহুতি দিয়ে
তাঁকে সন্তুষ্ট করেন। তাঁর তামসিক দেহ, তামসিক মন ও তামসিক তপস্যা কেবল তামসিক
জগতকেই দেখতে পেয়েছেন এবং বস্তুজগতের
উন্নতির উচ্চশিখরে উঠে অহংকার প্রদর্শন দ্বারা একটা ভয়ের রাজত্বের প্রতিষ্ঠা করে
নিজের অধীনে সবায়কে বন্দী রেখে সবার ভগবান হয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা ধরে
রাখতে পারলেন না,নিজের শক্তির অপব্যবহার করেই তিনি নিজের অধোগতির কারণ হয়ে উঠলেন
এবং নিজের বিশাল বংশকে ধ্বংস করলেন। রাবণ তপস্বী রামকে অতিশয় তুচ্ছ জ্ঞান করতেন ও
অহংকারে ঘৃণা করতেন, কিন্তু শেষে সেই তপস্বীর নিকটই তাঁকে পরাজিত হতে হল। এখানে
জগতের অসাধু, অহংকারী রাজাদিগকে বাল্মীকি মুনি সতর্ক করেছেন এবং রাবণের ন্যায় মহান-
জ্ঞানী- গুণী- দাম্ভিক- অঢেল সম্পদের মালিক তিনিও তপস্বীর আঘাতে শেষ হয়ে মাটিতে
মিশে গেলেন। তাঁর দাম্ভিকের শাসন যন্ত্র ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিলেন এক তপস্বী। তিনি
রাজা রাম হয়ে রাবণের সাথে যুদ্ধ করেন নি, যুদ্ধ করেছিলেন এক ভারতীয় আধ্যাত্মিক
জগতের তপস্বী হয়ে। এটাই হচ্ছে ভারতীয়
দর্শন – এটাই বেদের দর্শন – এখানে কোন বস্তুবাদের চিন্তাধারা নিয়ে অহংকার দেখাতে
গেলেই ভারতের পবিত্র আধ্যাত্মিক শক্তি জেগে উঠে তাকে সাবধান করার পরেই ধ্বংস করে
মাটিতে মিশিয়ে দিবে—কোন বোমা- আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র এই শক্তির ধারে কাছে ঘিসতে
পারবে না। জয় বেদ যজ্ঞের জয়।