বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৪/ ০৮/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞ করে সর্বত্র সেই এক সত্যকে দর্শন করে
যাও দেখবে আর কোন কিছুতেই ভয় থাকবে না।]
অদ্বৈত বাসনা জীবের অন্তরে জন্ম নেয়
স্বাভাবিকভাবে, যখন সুপ্ত বেদজ্ঞান জেগে উঠে। এই অদ্বৈত জ্ঞান বা ভাব মানুষের
জন্মসিদ্ধ জ্ঞান হলেও মায়ার বশে তা প্রকাশ পেতে পারে না। এই অদ্বৈত জ্ঞানের আলো না
জ্বলে উঠার জন্য মানুষের অন্তরে সদা ভয় কাজ করে। বড় বড় মহাপুরুষ – মহামানবগণও ভয়
পেয়ে ভুল করে বসেন দ্বৈত বোধের বশে। যখন মানুষের অদ্বৈত ভাব ঈশ্বরের কৃপায় অন্তরে
জন্ম নেয় তখন দ্বিতীয় ভাবনা মুহূর্তের
জন্যও উদয় হতে পারে না। এই ভাবের উদয় হলেই সমস্ত সৃষ্টিই এক অখণ্ড আত্মারূপে
প্রকাশ পায় এই অদ্বৈত জ্ঞানীর কাছে। হাজার হাজার দেব- দেবতার মূর্তি – হাজার হাজার
মন্ত্র- তন্ত্র সব মিলে-মিশে এক হয়ে যায় এবং এক ব্রহ্মজ্যোতি ছাড়া দ্বিতীয় কিছুই
তাঁর দৃষ্টিতে ধরা পড়ে না। শত্রু –মিত্র একই টাকার
এপিঠ- ওপিঠ রূপে তিনি দেখতে পান। মাটির মূর্তির মধ্যে যে ঈশ্বরকে তিনি দেখেন, সেই
ঈশ্বরকে তিনি মানুষের অন্তরেও দেখতে পান, আবার সর্বভূতেও দেখতে পান। কেনো তবে তিনি
কাউকে ভয় পেয়ে হত্যা করতে যাবেন বা হত্যা করার নির্দেশ দিবেন? কেনো তিনি মাটির –পাথরের
বা ধাতুর ঈশ্বরের মূর্তিকে ভয় পাবেন—ঘৃণা করবেন বা ভাঙতে যাবেন যদি দ্বৈতের বোধ না
থাকে ? যিনি সবকিছুতেই সেই এক সত্যকে দর্শন করেন তিনিই যথার্থ অদ্বৈতবাদীরূপে
পরিচিত। সেই মহাত্মার মন থেকে যাবতীয় ভয়- হিংসা- দ্বেষ –ঘৃণা দূর হয়ে যায়। তিনি
নির্ভয় ও নির্ভীক চিত্তে কেবল সত্যের ঘোষণা করেন। সনাতন ধর্মের অধীনে বৈদিক যুগের
মুনি- ঋষিরা বহুর মধ্যে একের আবির্ভাব দেখেই বিশ্ববাসীকে এক সুত্রে গেঁথে তুলে
সকলকে আত্মীয় বলে সম্বোধন করেন এবং সারা বিশ্বে সদায় সত্য- শান্তি- সাম্য ও ঐক্যের
বার্তা বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে প্রেরণ করতে থাকেন। জয় বেদ যজ্ঞের জয়।