Home » » বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ-- ১৩/ ০৭/ ২০১৬

বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ-- ১৩/ ০৭/ ২০১৬


বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৩/ ০৭/ ২০১৬  স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমেই বেদের প্রাণবন্ত “ওঁ তৎ সৎ” মন্ত্রকে সদায় অন্তরে ধরে রেখে আনন্দলোকে অবস্থান করো।]

স্রষ্টা সৃষ্টির মূল উৎস। সৃষ্টির মাধ্যমেই তাঁর পরিচিতি। সৃষ্টির মধ্যেই স্রষ্টার পরিপূর্ণতা। জীব ও জগৎ নিয়েই সৃষ্টি। ঈশ্বর বা স্রষ্টা জীব ও জগৎ এই তিন মিলে এক অখণ্ডতা – ব্রহ্মের সমগ্রতা সর্বত্র বিরাজ করছে। এই সমগ্রতার মধ্যেই এক অনাবিল আনন্দের জগৎ বিরাজ করছে। এই আনন্দময় জগতের প্রকাশক “ ওঁ তৎ সৎ” এই মন্ত্র। ওঁ (প্রণব) ব্রহ্ম। তৎ জীব। সৎ জগৎ। ব্রহ্মের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ বেদ। জীবের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ ব্রহ্মাণ্ড। জগৎ কর্মময়। কর্মের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ যজ্ঞ। সুতরাং “ ওঁ তৎ সৎ” মন্ত্রে বেদ, ব্রহ্মাণ্ড ও যজ্ঞকে বুঝায়। এই মন্ত্র উচ্চারণেই মানুষের বেদজ্ঞান, ব্রহ্মজ্ঞান ও সমস্ত প্রকার যজ্ঞের জ্ঞান লাভ হয়। ওঁ কারের মধ্যেও তিনটি অক্ষর আছে। অ- উ- ম। অ- কার আনন্দ। উ- কার চৈতন্য। ম-কার সৎ। অতএব ওঁকার সচ্চিদানন্দ। এটা বেদের খুব সুক্ষতম কথা। সুক্ষতত্ত্ব হল উ-কার গতি। ম-কার স্থিতি। অ-কার স্থিতি ও গতির মহাসমন্বয়। তাই বহির্জগৎ রূপময় এবং অন্তর্জগৎ ভাবময় বা নামময়। এই নামরূপাত্মক জগৎ সৃষ্টি ওঁ থেকেই। এর সুত্র তৎ সৎ। তৎ বলতে নামময় এবং সৎ বলতে রূপময়কে বুঝায়। আবার ওঁ তৎ সৎ বাক্যে ব্রহ্মের ব্যক্ত, অব্যক্ত ও পরমস্বরূপকেও বুঝায়। এর দ্বারাই বেদান্তের সৎ, চিৎ ও আনন্দকে ধরে রাখা হয়েছে। তাই ওঁ কার আনন্দস্বরূপ, জ্যোতির্ময় ও সর্বব্যাপক হয়ে জ্ঞানের মধ্যে অবস্থান করে। জ্ঞান বস্তুটিও নিজে অব্যক্ত, জ্ঞানকে দেখা যায় না। ‘তৎ’ বা জ্ঞান ব্যক্ত হয় সৎ- এর মাধ্যমে, সৎ -এর আচরণে। যেমন জ্ঞানীর জ্ঞান রূপ পায় তাঁর আচরণে। তাহলে আমরা বেদের ওঁ তৎ সৎ মন্ত্রে যে তেজস্ক্রিয় পদার্থ আছে তা দেখতে পাবো যখন তা নিজেরা নিজেদের আচরণ বৈদিক সুত্রধারা মেনে প্রয়োগ করবো নিজ নিজ জীবনে। আমাদের সমস্ত কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তি ধরে আছেন বেদ, তাঁর “ওঁ তৎ সৎ” মন্ত্রে। এই সাগরে যে যত স্নান করে পবিত্র হবে সে তত আনন্দ লাভ করবে এবং বেদের অমৃত রস পান করে অমরত্বের স্বাদ পাবে। জয় বেদ যজ্ঞের জয়। হরি ওঁ তৎ সৎ।  
Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide