Home » » বেদ যজ্ঞ সম্মেলন- ২৬ / ০৬/ ২০১৬

বেদ যজ্ঞ সম্মেলন- ২৬ / ০৬/ ২০১৬



বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৬/ ০৬/ ২০১৬ স্থানঃ –ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃবঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞ করেই মানুষকে দেবত্ব অভিমুখী অভিসারে গিয়ে বৃহৎ ভুমিতে স্থির হতে হয়।]

 মানুষকে ঈশ্বর বেদযজ্ঞের মাধ্যমে বহু উপদেশ দিয়েছেন বিভিন্ন রূপ ধরে। কিন্তু মানুষ শত উপদেশ পেলেও নিজের পুরানো অভ্যাস সহজে ছাড়তে পারেনা—তাই দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বর্গের উর্বশীর সাথী পুরূরবার ন্যায় তাদের সাধন মার্গ থেকে পতন হয়। ‘পুরূ’ মানে বহু, রব মানে কথা। অনেক কথা যে বলে সে পুরূরবা। সকল প্রাণির মধ্যে কেবল মানুষের দেহই কথা বলে। প্রয়োজনে- অপ্রয়োজনে, বৃথা কথা, বাজে কথা, কল্যাণকর- অকল্যাণকর কথা মানুষ অনবরত বলে। কোন পশুপাখী বাক্য উচ্চারণ করতে পারেনা, একমাত্র শব্দ ছাড়া। মানুষ যতই ঊর্ধ্ব স্তরে উঠে ততই মৌন হয়ে যায় এবং লোকের সংসর্গ ত্যাগ করতে থাকে—সেই সাথে নির্জনে নিঃসঙ্গ হয়ে থাকাতেই এক মহানন্দময় জগতকে উপলব্ধি করতে থাকে। পুরূরবা উর্বশীর সাথী হলেও তিনি ছিলেন মানুষ। মানুষ মাত্রই মনোময় জীব। সর্বদায় অধিক কথা বলে এবং প্রতিপদে পদে নিজ স্বার্থে প্রতিজ্ঞাও ভঙ্গ করে। মানুষের স্বাভাবিক কাজ হল মনন। মানুষের মননভুমি ক্ষুদ্র। দেহ, প্রাণ ও মন নিয়েই তার জগত- তাই এই তিন ভুমিতেই সীমাবদ্ধ। মানুষের সাধনা হল মনন শক্তিতে ভর করে ঊর্ধ্বে উঠে বৃহতের চেতনা নিয়ে জনলোক মহর্লোক ভেদ করে সত্যলোকে উঠে স্থির হয়ে থাকা। তখন মানুষের দিব্য জন্ম হয়। উর্বশী পুরূরবাকে গ্রহণ করেছিলেন সেই সত্যলোকে তাঁকে নিয়ে যাবার জন্যে। তিনি তাঁকে যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা তিনি রক্ষা করতে পারেন নি। নিজের প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন এবং উর্বশীর ধৈর্য ও কৌমার্যে আঘাৎ করেন। নিজ দোষে পুরূরবা সাধনপথ থেকে ভ্রষ্ট হয়ে পড়েন এবং উর্বশীকে হারান। পরিশেষে বৃহৎ ভুমিতে স্থিত হতে না পারায় অনুতপ্ত হয়ে উর্বশীকে বলেন—তোমার নিকটে আমি জ্ঞান শিক্ষা পেয়ে ধন্য হয়েছি। পরমজ্যোতি চিদানন্দের উপভোগ আমার হয়েছে। তুমি আমার হৃদয়ে থাক। এখন তোমার অভাবে হৃদয় সন্তপ্ত হলো। তোমার ভুমার ভোগ্যা ও বৃহতের আনন্দ। ক্ষুদ্রতা অল্পতার সাথে তোমার কোন সম্বন্ধ নেই, তাই বুঝতে পারলাম আমার মধ্যে তোমার ছায়া পড়েছিল মাত্র। জয় বেদযজ্ঞের জয়। 
Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide