বেদ
যজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৪/ ০৬/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃবঃ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ- [ বেদ যজ্ঞ করেই বেদের শক্তি ও ধর্মকে রক্ষা করার জন্য
এগিয়ে এসে -- দেশের স্বার্থে এখন সবায়কে এক লক্ষ্যে এগিয়ে
গিয়ে হাজার হাজার বিবেকানন্দ তৈরী করে
বিশ্বে বেদের চিরন্তন সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।]
বেদ
যজ্ঞের মাধ্যমেই হাজার হাজার বিবেকানন্দ স্বাভাবিকভাবে এই বিশ্বে তৈরী হয়ে যাবে এবং সারা পৃথিবী তোলপাড় করে তাঁরা সনাতন সত্য বা
ধর্মকে নিয়ে জেগে উঠবেন। বিবেকানন্দের দল বিবেকানন্দই তৈরী করে গেছেন এবং নিজের কাছেই সব চাবি- কাঠি রেখেছেন। কারণ নাবালকের হাতে তিনি বেদের সম্পত্তি ছেড়ে দিয়ে যান নি। ক্ষুদ্র চিন্তা- ক্ষুদ্র মন- ক্ষুদ্র হৃদয় যাদের তাদের
জন্য বেদের সম্পদ নয়—তাই তো তিনি কেবল বেদান্তের বীজ বপন করেই নিজেকে গুটিয়ে নেন। বেদ যজ্ঞের মাধ্যমেই বেদের বীজের স্ফুরণ অনিবার্য ঘটবে। যদি
জপ-ধ্যান কেউ
নাও করেন, ঐ প্রাচীরের
বটগাছের মত বেদের বীজের স্ফুরণ
হবেই। এই আধ্যাত্মিক শক্তির স্ফুরণ অর্থ দেহের শক্তি বৃদ্ধি নয়, ইচ্ছাশক্তির
বিকাশ। হাতী রাখতে হবে, খরের ঘরে ঢুকিয়ে দিলে ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে বেড়িয়ে যাবে।
তার আগে ঘরটিকে মজবুত করতে হবে। তাই পাকাপোক্ত করে নেওয়া হচ্ছে সকলকে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যাতে লোহার কড়াই না গলে তার জন্য
পুড়িয়ে পিটিয়ে যেমন টেম্পারড করা হয়, তেমনি দুঃখ- জ্বালা, অভাব অভিযোগ, রোগ শোক,
জপ, ধ্যান, স্মরণ, মনন, কর্মসাধনার মাধ্যমে তোমাদের দেহের অণু- পরমাণু কোষ মানসিকতাকে
এমনভাবে টেম্পারড করে নেওয়া হচ্ছে বেদ
যজ্ঞের মাধ্যমে যাতে তোমরা এখানকার তাপে না গলো, কামে মোহে
স্বার্থে না টলো। যখন সেই অবস্থা আসবে, এই চাবিগুলো তিনি খুলে দিবেন। দেশের সেবায়, দশের সেবায়
তাদের তিনি এমনভাবে নিয়োগ করবেন তাঁরা এই বিশ্বের সকলের হয়ে উঠবেন। তখন সবায় বিশ্ববোধে জাগ্রত হয়ে নিজের বিবেকানন্দ রূপকে সারা বিশ্বে নির্ভয়ে তুলে ধরবেন
অন্তরে অনন্ত বেদান্ত সূর্যের আলো নিয়ে। তিনি ভারতবাসীদের বেদের শক্তিবিহীন জীবন দেখেছিলেন এবং
তাঁদেরকে পরাধীনতার কবল থেকে মুক্তির মন্ত্র দিয়ে যান। ভারতবর্ষ স্বাধীন – কিন্তু
ভারতবাসীরা নিজেদের দীর্ঘকালের জরাজীর্ণ ধারা থেকে মুক্ত হতে পারবেন না তা তিনি
উপলদ্ধি করেই আত্মিক মুক্তির কথা বলেন নি। তিনি ক্ষুধার্ত অজ্ঞ ভারতবাসীকে নিজের
আত্মারূপে দেখে আগে তাঁদের জৈব ক্ষুধা মিটাবার ব্যবস্থা করেন বেদের সূত্র ধরে। এখন
আর সেই সমস্যা নেই –তাই এখন চাই ভারতবাসীদের বেদের যজ্ঞদৃষ্টি- বেদের দৈবদৃষ্টি –
বেদের আত্মিক দৃষ্টি। জয় বেদ যজ্ঞের জয়।