বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ – ১০/ ০৬/ ২০১৬ স্থানঃ
ঘোড়শালা- মুর্শিদাবাদ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ-- [ বেদ যজ্ঞ করেই বেদকে জানতে হয় এবং সেই বেদ দ্বারাই সকলের মঙ্গলের জন্য পথ ও কৌশল আবিষ্কার করতে হয়।]
বেদ
প্রজাপতি ব্রহ্মা কর্তৃক সৃষ্ট এমন এক মূর্ত জ্যোতিঃ যা ভূলোক দ্যুলোক ও
অন্তরিক্ষ লোক পরিব্যাপ্ত হয়ে রয়েছে সকল বস্তুর মধ্যে। এই বেদকে আশ্রয় করেই এই তিন
লোকে সবায় নিজ নিজ কক্ষ পথে অবস্থান করছে। বেদের আশ্রয়কে অস্বীকার করে যারা ভেদ
নীতিকে আশ্রয় করে জাত-পাত ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে বিভিক্ত করে মানুষের মঙ্গলের জন্য পথ
ও কৌশল আবিষ্কার করে তারা মানুষকে সংকীর্ণ
গণ্ডির মধ্যে বন্দী করে ফায়দা তোলার ফন্দি করে। এরা বেদের আশ্রয়ে থেকেও বেদকে জানতে পারেনা ভেদনীতিকে আশ্রয় করার জন্য। আর
যারা বেদকে আশ্রয় করে মানব জাতির মঙ্গলের জন্য পথ ও কৌশল আবিষ্কার করে
তারা উদার ও মহান হয়ে
বৃহস্পতির ন্যায় গুরুর আসনে বসে সমাজকে আলোকিত করে বেদের জ্যোতিঃ দিয়ে। মানুষকে কোনো জাত-পাত- ধর্মের গণ্ডীর
মধ্যে ফেলে অসম্মান করার অর্থ বেদের স্রষ্টা বা ঈশ্বরকে অসম্মান করা। কর্ম ও গুনের ভিত্তিতে মানুষের মান- মর্যাদা থাকবে এটা
স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তূ জাত-পাত ধর্মকে টেনে এনে মানুষের মধ্যে বিভাজন এ যেন
ধ্বংসের পূর্বাভাস। মানুষ এখন আধুনিক বিজ্ঞানের কোলে বাস করেও কেন এই প্রথা মেনে
নিচ্ছে-তা ভাবা যায় না। মানব জাতির উন্নতি ঘটাতে হবে –জ্ঞানের বিপ্লব ঘটিয়ে এই
চিন্তাধারা কারো মনে কাজ করছে না। প্রকৃত সাম্যবাদ যদি সত্যের উপর ভিত্তি করে,
জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয় সারা বিশ্বে, তাহলে তো আর জাত পাত ধর্মের
বালাই থাকবে না। এক ঈশ্বরের অধীনে সকলে কর্মচারী বা কর্মী রূপে পরিচয় পাবে।এই
সম্মান যদি পৃথিবীর বুকে মানুষ না পায় তবে আর কোথাও কি তার জায়গা হবে? মানুষ
বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী জীব হয়েও যদি ভেদ নীতি অবলম্বন করে তাহলে তো পৃথিবী থেকে
কোনোদিন হিংসা দ্বেষ মুছে যাবে না। এই হিংসা দ্বেষের শিকার হবে
জল-বায়ু-মাটি-গাছপালা-পশু-পাখী সহ প্রতিটি মানুষ। তোমরা বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী
হয়ে বিশ্ববাসীকে জাগ্রত করো। সকলকে স্রষ্টার সৃষ্টির মঙ্গলের চিন্তা করতে বল।
পৃথিবীর বুকে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। যে জীবের চেতন সত্তা ব্রহ্মাণ্ড ব্যাপী কাজ করে তার এত অধঃপতন কেন? যে জীবের
দেহে ঈশ্বরের মন্দির মসজিদ গির্জা পবিত্র অবস্থায় বিরাজ করছে- তাদের কি কারো প্রতি
হিংসা দ্বেষ ঘৃণা শোভা পায়? সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই- এই কথা কেন ভুলে
যাচ্ছে তারা? কেন এখনো তারা জাতীয় জ্ঞান, মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিক জ্ঞান ও
আধ্যাত্মিক জ্ঞানকে অস্ত্র করে মানব জাতির মঙ্গলের জন্য পথ ও কৌশল আবিষ্কার করছে
না- তোমরা তাদেরকে প্রশ্ন করো। তাদেরকে বলো
অন্তরাত্মার চিন্ময় শক্তিই ব্রহ্ম। এই ব্রহ্মশক্তিকে বেদ যজ্ঞ করে জাগ্রত করো ও
বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী বা বেদের কর্মী হয়ে ব্রহ্মদর্শন করো তাহলেই মায়ান্ধকার
ঘুচে যাবে। তখনি সবার মঙ্গলের কথা চিন্তা করে তোমরা সবার হয়ে উঠবে বেদ ভগবানের
ন্যায় এবং অতি সহজেই সবার মঙ্গলের জন্যে পথ আবিষ্কার করতে পারবে। জয় বেদ ভগবানের
জয়।