বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ ০৫/ ০৫/ ২০১৬
আজকের আলোচ্য বিষয়===
[বেদ যজ্ঞ করে দেহাতীত সত্তার ধ্যান করো- তিনিই হলেন তোমার আত্মা বা ভগবান।]
বেদ যজ্ঞ করেই তোমাদের নিজ আত্মাকে দেহাতীত- ত্রিগুণাতীত ও ত্রিকালাতীত
ঈশ্বর রূপে জানতে হবে। এই দেহের মধ্যে যে অনাত্ম বস্তুসমূহ আছে তারা সকলেই নিজেকে
আত্মা রূপে মিথ্যা অভিমান করে এবং তারাই আত্মার বন্ধনের কারণ হয়ে থাকে। যা অভিমান
সৃষ্টি করায় তা হলো অবিদ্যা, আর যার দ্বারা সেই অভিমান নিবারিত বা বিনাশ হয় তা হলো
বিদ্যা বা বেদ। তাই আমি দেহ নই, আমি দশ ইন্দ্রিয় নই, আমি বুদ্ধি নই, মন নই, অহংকার
নই। আমি হলাম অপ্রাণ অমন; আমি হলাম বুদ্ধি প্রভৃতি বৃত্তিসমূহের সদা সমুজ্জ্বল
সাক্ষীস্বরূপ; আমি হলাম নিত্য চিন্ময় আত্মা বা ঈশ্বর, এ ব্যাপারে কোনও সংশয় নাই।
এই বিশ্বাস অন্তরে দৃঢ় করে বেদ যজ্ঞ করে যাও দেহাতীত- ত্রিগুণাতীত ও ত্রিকালাতীত
আত্মারূপে নিজেকে দেখার জন্য। তাহলেই তুমি জড়জ্ঞান ও জড়বুদ্ধি থেকে মুক্ত হয়ে
নিত্য সদানন্দ শুদ্ধ জ্ঞানময় অমল আত্মারূপে সর্বভূতে পরিব্যাপ্ত হয়ে নিজেকে দেখতে
পাবে, এতে কোন সংশয় নাই। তখন বুঝতে পারবে আমার দেহই নেই, ফলে জন্মমৃত্যু কোথা থেকে
আসবে? আমার প্রাণ নেই- তাহলে আমার ক্ষুধা তৃষ্ণা আসবে কেনো? আমার নিজস্ব চেতনাই
নেই, সুতরাং শোকমোহের বন্ধন আসবে কোথা থেকে? আমি কর্তা নই, সুতরাং কর্মের বন্ধন ও
মুক্তি প্রসঙ্গ আমাকে ঘিরে আসতেও পারেনা। আমি দেহাতীত সত্তা তাই আমাকে এই পার্থিব
জগতের রোগ- শোক- ব্যাধি- আধি- দুর্বলতা –কাপুরুষতা কোন কিছুই স্পর্শ করতে
পারেনা--- এই চিন্তা করে সদায় বেদ যজ্ঞ করে যাও—দেখবে এরা সবায় তোমাকে ছেড়ে
পালাবে- তখন তুমি অজ নিত্য শাশ্বত অবস্থা লাভ করে সদায় এক ব্রহ্মে লীন হয়ে থাকবে।
এটাই হচ্ছে আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন। এটাই হচ্ছে তোমাদের জীবনে রামসেতু
নির্মাণ। হরি ওঁ তৎ সৎ।