বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ –১০/ ০৫/ ২০১৬ আজকের আলোচ্য
বিষয়ঃ –[বেদ যজ্ঞ করেই জীবকে অমর হতে হবে জন্ম- মৃত্যুর পিছনে কি রহস্য আছে তা জেনে
নিয়ে।]
বেদ
যজ্ঞ দ্বারা সৃষ্টি –স্থিতি- লয়ের মাধ্যমে জীবের জন্ম- কর্ম –মৃত্যু লীলা প্রবাহমান গতিতে চলছে। কে এই বেদ যজ্ঞ করে চলেছেন সবায়কে নিজের
বৃত্তে ধারণ করে রেখে? তিনি সবার সাথেই আছেন অথচ কেউ তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন না কেনো?
জ্যোতি পরমপিতাকে জিজ্ঞাসা করলেন—পরমপিতা
আপনি সদায় আমার সাথে আছেন অথচ কেনো আমি আপনাকে জ্ঞানচক্ষু ছাড়া বাইরের চোখ দিয়ে
দেখতে পাচ্ছি না ? পরমপিতা বললেন—তোমাদের
বাইরের দুটি চোখ তোমাদের অন্তরের জ্ঞানচক্ষুর সাথেই যুক্ত করা আছে। একটু মন-
বুদ্ধি- অহংকারকে স্থির করে, দেখো আমি তোমার পাশেই বসে আছি এবং তোমার সাথে কথা
বলছি। জেনে রেখো-- পিতা যতদিন না তার সন্তানদের মনের মতো করে গড়ে তুলতে পারেন, ততদিন তাঁর শান্তি
থাকে না। তাই আমিও আমার সন্তানদের যতদিন না আমার মতো করে গড়ে তুলতে পারছি, ততদিন
আমারও কর্মের শেষ নেই, সন্তানদেরও বিশ্রামের কোন উপায় নেই। তাই যতদিন না আমার
সন্তান আমার মনের মতো ভাবে গড়ে না উঠে,
ততদিন তাকে আমি জন্ম- কর্ম –মৃত্যুর নাগপাশে বেঁধে রাখি। আমার মনের মতো হয়ে গেলেই
তার বিশ্রাম। আর তাকে এই জন্ম- কর্ম –মৃত্যুর কবলে পড়তে হয় না। সে আমার নিত্য
লীলার সাথী হয়ে এবং আমার সাথে লীলায়
মত্ত থাকে বীর হনূমানের মতো আমাকে তার অন্তর রাজত্বে
ধারণ করে বিশ্বমানব শিক্ষার বীর কর্মী হয়ে। আমি সর্বজগতের সকলের প্রভু, আমি সদায়
বেদ যজ্ঞ করে মহামহিমশালী হয়ে জগতকে রক্ষা করার জন্যে সকল গুরুতর কর্মসমূহের
দায়িত্বপালন করে চলেছি বীর হমুমানের ন্যায় ভক্ত বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মীদের আমার
বৃত্তে ধারণ করে। এই রহস্য সাধারণ চক্ষুধারী বায়ুভক্ষনকারী মানুষ বা দেবতা জানতে
পারেন না। জ্যোতি পরমপিতার সান্নিধ্যে থেকে জিজ্ঞাসা করলেন---
এই জন্ম- কর্ম –মৃত্যুর লীলা কতদিন চলবে?
একটি জীব অর্থাৎ যাকে তোমরা আত্মা বলছো তা থেকে
অসংখ্য জীবের সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলো সবই আমার সন্তান বা শক্তির রূপ – তাদের মধ্য দিয়েই আমি আমার এই জন্ম- কর্ম
– মৃত্যুর লীলা চালিয়ে যাচ্ছি, এই লীলা কোনদিন-ই বন্ধ হবে না—কারণ আমি চির যৌবনে
ভরপুর আর তোমাদের ধরিত্রী মাতা চির যৌবনা হয়ে নিত্য-নূতন ভাবে আমার কাছে প্রকাশিত—তার
আমার সৃষ্টিকে ধারণ করতেই আনন্দ । সবই আমার শক্তির রূপ ও আমি সবার সাথে যুক্ত
থেকেও নির্বিকার। কত পৃথিবী সৃষ্টি হচ্ছে ও ধ্বংস হচ্ছে প্রতিনিয়ত কিন্তু আমি
নির্বিকার- নিরাকার হয়ে সবকিছুই পরিচালনা করছি।
সর্বজগতে চারযুগেই আমার প্রতাপ সমুজ্জ্বলভাবে বর্তমান। আমি চিরকাল সজ্জনগনের
রক্ষাকর্তা, অসুরশক্তির বিশাশকারী এবং ভক্তদের প্রিয়পাত্র ভগবান হয়ে বিরাজ করি।
আমি যারা বেদ যজ্ঞ করে তাদের হৃদয়ে নিজের বসতি স্থাপন করি। আর আমি যাদের হৃদয়ে
বসতি স্থাপন করি তারাই মুক্ত অমৃতের সন্তান হয়ে আমার লীলা সাথী হয়ে যায়। জ্যোতি
নির্বিকল্প সমাধিতে থেকে বললেন--- হে প্রভু, আপনি আমার হৃদয়টিকে চিরকালের জন্যে
আপনার বাসস্থানে পরিণত করুন, আমি যেন সদায় আপনার লীলা সঙ্গী হয়ে থাকি এবং জন্ম-
মৃত্যুর নাগপাশ থেকে সদায় মুক্ত থাকি। হরি ওঁ তৎ সৎ।