[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে নিজ অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করো সত্যের উপর, কখনো তা
পরিত্যাগ করবে না।]
বেদের অধিকার সবার সমান তাই এই পৃথিবীর বুকে
সকলেই সমান অধিকার নিয়ে অবতীর্ণ হয়। এই সত্য জেনে নিজ নিজ অধিকার মতো সকলে কর্ম
অর্থাৎ বেদ যজ্ঞ করে যাবে—এই অধিকার কখনো পরিত্যাগ করবে না। রাজা তার অধিকার মতো
কর্তব্য করবে, প্রজারা তাদের অধিকার মতো কর্তব্য কর্ম করবে। পদকে মর্যাদা দিয়ে নিজ
নিজ অধিকার মতো সকলে কর্তব্য কর্ম করে গেলে বিশ্বে শান্তি- ঐক্য ও সাম্য
সর্বক্ষেত্রে বজায় থাকবে। প্রত্যেক মানুষের স্বভাব- গুণ অনুসারে কর্ম করার অধিকার
আছে এ পৃথিবীর বুকে। স্বভাব- গুণ ও কর্ম অনুসারে মানুষের খাদ্য বাসস্থান ইত্যাদির
ব্যবস্থা হয়ে থাকে। মানুষের স্বভাব ও গুণ যত উন্নত হবে তত তার কর্মে অধিকার
জন্মাবে উন্নত স্তরের পটভূমিতে। মানুষ নিজের স্বভাব ও গুণের পরিবর্তন না ঘটিয়ে যখন
অধিকার দাবি করে, তখনি দেশে ও সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হয়। পিতা- মাতা হবার অধিকার
সমস্ত ছেলে-মেয়ের আছে। তারা নিশ্চয় নিজ অধিকার পরিত্যাগ করবে না। কিন্তু সেই
অধিকার মতো স্বভাব ও গুণের পরিবর্তন না ঘটালে, তারা তো শংকর জাতের মানুষ সৃষ্টি
করবে। সেই সন্তান কিছুতেই পবিত্রসত্তার সাথে নিজেকে যুক্ত করে জীবনেও পবিত্র হতে
পারবে না। তাই পিতা-মাতা হবার আগে সত্যজ্ঞান লাভ করার অধিকার কখনো পরিত্যাগ যারা
করে না তারাই ধন্য পিতা-মাতা হয়ে গর্ববোধ করে। পৃথিবীর বুকে সাত- আটশো কোটি মানুষ
রয়েছে কিন্তু পবিত্র সত্তার সাথে যুক্ত হয়ে কতজন মানুষ তাঁর পথে এগিয়ে চলেছে? কতজন
মানুষ তাঁর জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘরের সাথে যুক্ত হয়ে সত্যের সাধনা, উপাসনা বা গবেষণা
করছে ? মানুষের প্রথম অধিকার ও কর্তব্য বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে সত্যকে জানা। কেনো
মানুষ সেই অধিকার পরিত্যাগ করে মিথ্যা জীবন নিয়ে চর্চা করছে ? মানুষ নিজ অধিকার
পরিত্যাগ করলেই দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন প্রকৃত সত্যকে তারা ত্যাগ করে অবিশ্বাসী হয়ে
যায়। অবিশ্বাসী মানুষের ইহকাল ও পরকালে কোনো সুখের ঘর থাকে না। তাই তোমরা
বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে আগে নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠা করো নিজেকে জেনে ও প্রকৃত
সত্যকে জেনে। ওঁ তৎ সৎ ।