[ বেদ যজ্ঞ করতে গিয়ে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীকে প্রশ্রয় দেবে না।]
বেদ যজ্ঞের ন্যায় পবিত্র কর্মে বাধা-বিঘ্নকারী একদল মানুষ রয়েছে এই সমাজের
বুকে। তারা মানুষ যতই ভালো কাজ করুক না কেনো বিভিন্নভাবে সেই কাজে বাধা দেওয়ার
চেষ্টা করবে প্রকৃতির সুত্র অনুসারে। যজ্ঞ দেখলে যেমন রাক্ষস সেনারা ছুটে এসে যজ্ঞ
পণ্ড করতো বেদের যুগেও- তেমনি এই যুগেও বেদ যজ্ঞের নাম শুনলেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে
তা পণ্ড করার জন্যে। বেদ যজ্ঞ করা কালে তাই সদায় মনে রাখবে – এই যুগের রাক্ষস
প্রকৃতির শয়তান মানুষ-এর ভালো কাজ পণ্ড করার জন্যে সব প্রকার চেষ্টা চালাবে। আর সমাজের বুকে এই
শ্রেণির মানুষের সংখ্যায় বেশী দেখতে পাবে। এই বিঘ্ন
সৃষ্টিকারী শয়তান প্রকৃতির মানুষের থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবে সৎ কর্ম করতে গিয়ে।
তারা এমন –এমন কথা বলবে, যা শুনে তোমার আর সৎকর্ম করতে ইচ্ছা হবে না। সৎ পথে চলার
বাসনা তোমার শেষ করে দেবে দু-চারটা বানানো মিষ্টি কথা বলে—এদেরকে আবার দেখতে পাবে সমাজের বুকে বিশাল উচ্চ পদ দখল
করে আছে। এই শয়তানরা অতি চালাক। তোমার অন্তরের বন্ধুর অন্তরে প্রবেশ করে তোমাকে
দুর্বল করে পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করবে। অনেক সময় এই বিঘ্নকারী শয়তানরা তোমার
স্ত্রীর হৃদয়ে প্রবেশ করে, তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে—তাই ভালো কাজ করার বাসনা
জাগলে তা কাউকে জানাবে না, যতক্ষণ না সেই কাজ শেষ হয়। বিঘ্নকারীকে একবার প্রশ্রয়
দিলে—তারা তোমাকে ধরে ফেলবে ও বেঁধে ফেলবে এমনভাবে যে জীবনে আর সৎ- কর্ম অনুষ্ঠান
করতে পারবে না। তাই যারা সমস্ত বাধাবিঘ্নকে এড়িয়ে সৎ কর্মে ব্রতী হয় তারাই কেবল
জীবনে সফল হয়। সমাজে অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষ আছে, তাদের জ্ঞান-বুদ্ধি অতি পবিত্র ও
নির্মল কিন্তু তারা মানুষকে সংঘবদ্ধ করতে পারে না বাধাবিঘ্নকে অতিক্রম করে কাজ
করতে পারবে না সেই ভয়ে। তাদেরকে সৎ- কর্ম অনুষ্ঠানে ডাক দিলে আসে ও অংশগ্রহণ করে।
এরা সকলেই অপেক্ষা করছে বিশ্বমানব শিক্ষার মঞ্চে এসে বেদ যজ্ঞে অংশগ্রহণ করার
জন্যে। যখনি এই মঞ্চের ডাক তারা পাবে
তখনি ঝাঁপিয়ে পড়বে নিজ জ্ঞান ও বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে বিশ্বমানব
শিক্ষাকে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠার জন্যে। তারা একাকিত্ব বোধ করছিল-- এখন তোমরা যাও
বিশ্বমানব শিক্ষার তরীতে চেপে --সকলে ঝাঁপিয়ে পড়বে এই তরীতে চেপে বসার জন্যে। তারা
সকলেই এসেছে ঈশ্বরের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘর থেকে বিশ্বমানব শিক্ষাকে পৃথিবীর বুকে বেদ
যজ্ঞের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে। ওঁ তৎ সৎ ।