[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে একমাত্র ঈশ্বর মানুষকে
সৎ ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করেন।]
প্রত্যেক মানুষের হৃদয় মন্দিরে ঈশ্বর অবস্থান
করেন বলেই মানুষ তাঁর কথা শুনলেই শান্ত হয়ে যান কিছুক্ষণের জন্যে। যদি তিনি হৃদয়
মন্দিরে না থাকতেন তবে প্রতিটি মানুষ শয়তানে পরিণত হত। এই পৃথিবী হয়ে উঠতো শয়তানের
আখড়া। শয়তানি বুদ্ধি থেকে কোনো মানুষ মুক্ত হতে পারতো না। সেই সাথে মানুষের জন্যে
কোন শাস্ত্র গ্রন্থও দেখা যেতো না। কিন্তু পৃথিবীর বুকে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষ
শয়তানি বুদ্ধি থেকে মুক্ত হয়ে সারাদিনের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভালো চিন্তা
করতে বাধ্য হন। কারণ হৃদয় মন্দির থেকে বিবেক বারবার তাকে আঘাৎ দিতে থাকে সেই শয়তানি
বুদ্ধি ও কার্যকলাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্যে। মানুষ যখন বিবেক- পাখির ডানায় ভর দিয়ে
উড়ে চলে সত্যলোকে তখন সে নিজের ভুল নিজে ধরতে পারে ও অনুতপ্ত হয় কৃতকর্মের জন্যে।
তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পারা যাচ্ছে হৃদয় মন্দিরের দেবতা--- না শয়তান মানুষকে বুদ্ধি
দিয়ে পরিচালনা করে। হৃদয়মন্দিরের ঈশ্বর জাগ্রত হলে শয়তান তাঁকে স্পর্শ করতে পারে
না। একমাত্র ঈশ্বর হৃদয়মন্দিরে জাগ্রত হলে তিনিই মানুষকে সৎ ও সত্যের উপর
প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন ও বেদযজ্ঞ করার অধিকার দান করতে পারেন। তাছাড়া মানুষ সত্যকে
উপলব্ধি করতে পারে না। সত্যকে উপলব্ধি না করলে শয়তান যে কোনো মুহূর্তে
মানুষের অন্তরে প্রবেশ করে কু-চিন্তার কবলে ফেলে দিয়ে কু-পথে নিয়ে যেতে সক্ষম হয় ও
কুকর্মে লিপ্ত করে। শয়তান কখনো মানুষকে সৎ ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না ও
মানুষের মঙ্গল করতে পারে না। তারা মরীচিকা সৃষ্টি করে মানুষের কামনা –বাসনাকে
জ্বলন্ত আকারে পরিণত করে বেদযজ্ঞের বিঘ্নকারী হয়ে দাঁড়ায়। সেই কামনা –বাসনা পূরণ
করতে গিয়ে মানুষ আগুনে ঝাঁপ দেয় ও কোনোদিন সত্যকে জানতে না পারায় নরকের আগুনে
জ্বলে। যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে নিজ হৃদয়মন্দিরে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে তাঁকে জাগ্রত
করে নিজে নির্বিকার ও নিরাকার হয়ে যায়, তারা সাকার ঈশ্বরের লীলাখেলা নিজের অন্তরে
দেখে সৎ ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তাঁর অনুগত দাস হয়ে অবস্থান করে। তাঁদের
সমস্ত কাজ পরিচালনা করেন স্বয়ং ঈশ্বর। তাঁদের নিজস্ব কোনো কাজ থাকে না – যা কাজ সব
ঈশ্বরকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিক নিয়মে হয়ে যায় কেউ তার টের পায় না। ওঁ তৎ সৎ।