[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে গায়ত্রী মন্ত্র দ্বারা নিজ
আত্মাকে জাগ্রত করে সদায় পরমাত্মার সাথে যুক্ত থাকো – দেখবে এই পার্থিব জগতের রাজ
সম্পদও তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না।]
সব
মন্ত্রই হৃদয় মন্দিরে ঘুমিয়ে থাকে তাঁকে জাগ্রত করতে হয় সাধনার মাধ্যমে। বেদে
মন্ত্রের শেষ নেই। ঈশ্বর স্বয়ং বলেছেন মন্ত্রের মধ্যে আমি গায়ত্রী। তাহলে যারা
গায়ত্রী মন্ত্রের সাধনা করেন তাঁরা তাঁরই সাধনা করেন। এই গায়ত্রী মন্ত্র খুব সহজ-
সরল সবার জন্যে। [ ওঁ ভূ ভূব স্ব তৎ সবিতু বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি। ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ। ওঁ ] এই গায়ত্রী মন্ত্রের
বাংলা অর্থ হচ্ছে – যে পরমাত্মা বা সৃষ্টিকর্তা সৎ- চিদ- আনন্দ স্বরূপ বিরাজমান,
যিনি আমার মধ্যে অধিষ্ঠান থেকে জ্ঞান ও বুদ্ধি সর্বদা প্রেরিত করেন, সেই প্রসিদ্ধ
পরমাত্মার তেজের আমি ধ্যান করি বা আরাধনা করি। এই নিষ্কাম আরাধনা আর অন্য কোন
বেদের মন্ত্রে আত্মার জাগরণের জন্যে নাই—তাই ঈশ্বর স্বয়ং এই মন্ত্রে অধিষ্ঠান থেকে
সাধককে নিজের মধ্যে তিনি ধারণ করেন—সাধকও
এই মন্ত্র দ্বারা তাঁর আশ্রয়ে পরমানন্দ লোকে অধিষ্ঠান করেন। তাই সব মন্ত্রের রাজা
হচ্ছেন গায়িত্রী মন্ত্র। বেদ যজ্ঞ মানুষ করেন বেদমাতা গায়িত্রীকে আশ্রয় করে নিজ আত্মার
সৎ- সত্য- সুন্দর ও জ্যোতির্ময় রূপে অধিষ্ঠান করে সদায় আনন্দলোকে অবস্থান করার
জন্যে। এই মন্ত্রের দ্বার ঈশ্বর সবার জন্যেই উন্মুক্ত করে রেখেছেন এই
বিশ্বপ্রকৃতির বুকে। মানুষ সদচিদানন্দের উপাসক না হয়ে যদি নিজের কামনা- বাসনার
উপাসক হয় তবে কিভাবে সে আনন্দময় লোকে অধিষ্ঠান করবে ও দুঃখের হাত থেকে পরিত্রাণ
পাবে? সহজ –সরল পথের সন্ধান পেয়েও মানুষ যদি কণ্টকাপূর্ণ পথে গমন করে তবে তো সে
কোনদিন গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবে না। জয় বেদমাতা গায়িত্রীর জয়।