[ বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও ধ্যান- জপ- তপস্যা অপেক্ষা ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান
সবার জন্যে শ্রেষ্ঠ বেদযজ্ঞ এই জগতে।]
জীব দেহেই ঈশ্বরের বাস। এই দেহ টিকে আছে খাদ্যের উপর ভর করে। তাই ঈশ্বর
নিজের দেহ নানারূপে সৃষ্টি করার আগেই সেই দেহকে এই ধরায় ধারণ করে রাখার জন্যে
খাদ্যের ব্যবস্থা করেন। এই জ্ঞান না থাকলে মানুষের দিনরাত ধ্যান- জপ- তপস্যা করেও
কোন ফল লাভ হয় না। একজন ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করার ফল সারা বিশ্বের সমস্ত
ক্ষুধার্ত মানুষকে খাদ্য দান করার ফল জেনে যারা নিজ সামর্থ্য অনুসারে খাদ্যদান
করেন তাঁরাই শ্রেষ্ঠ যোগী এই সংসারে। যারা ঈশ্বরকে খাদ্য দান না করে নিজের উদর
পূর্তি করেন তাঁরা তো পাপান্ন ভোজন করেন। যারা খাদ্যের যোগার না করে ধ্যান- জপ-
তপস্যার মাধ্যমে যাগ- যজ্ঞ করেন তাঁরা কেবল ভস্মে ঘি ঢালেন। মানবজাতিকে ঈশ্বর শ্রেষ্ঠ জীবরূপে সৃষ্টি করেছেন তাঁর নিজের
পূর্ণ জ্ঞান- বুদ্ধি- শক্তি ও বিচার ক্ষমতা দিয়ে সবার
মঙ্গল করার জন্যে। তিনি তাঁর মধুবনে কারো জন্যে কোন অভাব রাখেন নি। কিন্তু মানুষ
যত বুদ্ধিমান হচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে নিজেদের সভ্যতা গড়তে গিয়ে নিজের সুখের জন্যে
অপরকে বঞ্চিত করার বিভিন্ন কলা কৌশল অবলম্বন করেই চলেছেন। যেক্ষেত্রে প্রতিটি
জীবদেহ একই ঈশ্বরের মন্দির, সেক্ষেত্রে মানবজাতি এক ঈশ্বরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন
জাতি- ধর্ম- সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে অহংকারী হয়ে উঠে কোন অন্ধকার জগতে মানবজাতিকে
নিয়ে যাবার জন্যে? তাঁরা কি নিজেদেরকে নিজেরাই নরকের পথে নিয়ে যাচ্ছেন না নিজেদের
মানবধর্মকে জলাঞ্জলি দিয়ে? আজ সারা বিশ্বের মানবজাতির চিন্তাভাবনা করার সময়
এসেছে--- কেনো একশ্রেণির মানুষ সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে রাতারাতি ধনী হয়ে উঠবে?
কেনো একশ্রেণির মানুষ নিজেদের হাতে ক্ষমতা নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষকে
মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদের জীবন নিয়ে ছিনিবিনি খেলবে? আজ সাধারণ মানুষের লজ্জা
হচ্ছে আইনের রক্ষক, আইনের প্রণেতা, দেশের ও দশের রক্ষকদের দেখে কিন্তু এই ভোট
ভিক্ষুকদের মনে- প্রাণে কোন লজ্জার চিহ্ন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। মানব আত্মার এই
পৈচাশিক দম্ভ এই মাটির স্বর্গে কতদিন চলবে অপরকে ফাঁকি দিয়ে, বোকা বানিয়ে রেখে? আজ
এই পৃথিবীর বুকে দরিদ্র, অসহায়, অনাথ করে ঈশ্বরকে যারা রেখেছেন নিজেদের শয়তানী
বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা আর যাহৌক তাঁরা কেউ ঈশ্বরের সাথে যুক্ত মানবাত্মা নন।
তাঁরা এককথায় শয়তানের আত্মা হয়ে এই পৃথিবীর বুকে বিচরণ করছেন নরক ভরাবার দায়িত্ব
নিয়ে শয়তানরাজার নিকট থেকে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।