[ বেদ যজ্ঞ করে তোমরা আদি অন্ত হীন জগতের পতির আশীর্বাদ ধন্য সন্তান-
সন্ততি হয়ে নির্ভয়ে সর্বত্র বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে বিচরণ করো।]
বেদ
যজ্ঞের অধিকর্তা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগৎপতি ও বিশ্বের রক্ষক। তিনিই বিপিন বিহারী
সবাকার পিতা। তাঁর ইচ্ছায় এই জগতের সৃষ্টি। তাঁর ইচ্ছাতেই ক্ষিতি- অপ- মরুৎ-
ব্যোম- তেজের সৃষ্টি এই জগৎ মাঝারে সবায়কে প্রাণবন্ত করে রাখার জন্যে। তাঁর
ইচ্ছাতেই মানবজাতির সৃষ্টি। এই মানবজাতিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্যে তিনিই বিশ্বব্যাপী
তাঁর বিশ্বমানব শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এই বিশ্ববিদ্যলয়ের অধিকর্তা তিনি
নিজেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ পাঠ গ্রহণ করবার জন্যে ভর্তি হবো না বললেও তাঁর
নিস্তার নাই। সকলকেই এই পবিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে একটার পর একটা ডিগ্রি
নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে তাঁর রাজত্বের বিভিন্ন পদের দায়িত্ব নিতে হয়। এখানে কেউ অপরকে
অনুকরণ করে বা টোকাটুকির মাধ্যমে বা ফাঁকি দিয়ে ডিগ্রি লাভ করতে পারে না। যারা
অজ্ঞানতা বশতঃ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে পূজা-অর্চনা, নমাজ পড়া, প্রার্থনা,
বলি, কোরবানি ইত্যাদি পন্থা অবলম্বন করে ঈশ্বরের আশীর্বাদ ধন্য হতে চান তাঁরা
নিজেকে আরও অন্ধকার কারাগারে নিমজ্জিত করে তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তাঁর গড়ে
তোলা বিশ্বমানব শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় অমর অক্ষয় হয়ে চিরকাল আছে- ছিল- থাকবে। এর
অস্তিত্বের বিনাশ কেউ ঘটাতে পারবে না। এখানে সকলকেই জন্মের সাথে সাথে ভর্তি করে
নেওয়া হয় এবং তাঁর শিক্ষা শুরু হয়ে যায় প্রকৃতিমায়ের কোলে চেপে এক অদ্ভুত আনন্দময়
পরিবেশে। যারা এই সত্য জানে না তাঁদের প্রতিপদে পদে ধাক্কা খেতে হয় ও এই
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকর্তা তাঁদের দর্প প্রতিপদে পদে চূর্ণ করতে থাকেন শিক্ষা
দেওয়ার জন্যে। তাই যারা মানুষের মধ্যে বুদ্ধিমান, তাঁরা নিজের জ্ঞান-বুদ্ধির উপর
ভর করে, নিজের জ্ঞান- বুদ্ধিকে বিশ্বতরঙ্গের সাথে যুক্ত করে বিশ্বমানব শিক্ষার
কর্মী হয়ে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকর্তার অধীনে থেকে নির্ভয়ে বেদযজ্ঞ করে চলেন।
হরি ওঁ তৎ সৎ।