[ বেদ যজ্ঞ করতে করতে তোমরা যেমন পথ ধরে যাবে তেমন সৌগন্ধ জীবনে লাভ করবে।]
তোমরা পৃথিবীতে মানুষ হয়ে এসেছো বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে জীবনকে সৎ- সত্য- সুন্দর ও
জ্যোতির্ময় রূপে গড়ে তোলার জন্যে। তাই তোমাদেরকে যে কোনো একটা পথ ধরে চলতে
হবে। পৃথিবী যেমন নিজের অক্ষরেখার উপর চলছে থেমে নেই – তেমনি তোমাদের জীবন চলছে – সেও থেমে নেই।
কবে চলা শুরু করেছো, তা জানো না, কবে চলা শেষ হবে তাও জানো না। চলতে চলতে কত কী
দেখছো, কত ফুলের সৌগন্ধ গ্রহণ করছো, কিছু স্মৃতিতে থাকে –কিছু ভুলে যাও। কেন ভুলে
যাচ্ছো? জীবন তো ভুলে যাবার জন্য নয়। ভুলে যাবার মূল কারণ তোমাদেরকে ভোলাতে ধরেছে
এবং ভুল পথে চলতে শুরু করেছো। যে পথে তোমরা চলেছো সেই পথে গোলাপের বাগান নেই। নেই
কোনো ঝর্না, নেই কোনো বাগান, নেই কোনো পাখির কলতান। এই পথে কেবল শূকনো মরুভুমি -আর মরুভূমির উপর খেলা করছে মরীচিকা। নেই কোনও
ফুলের সৌরভ। আছে শুধু মরা-পচার গন্ধ। শয়তান তোমাদেরকে মরীচিকা দেখিয়ে স্বপ্ন
দেখচ্ছে স্বর্গে নিয়ে যাবার। শয়তান কোনোদিন গোলাপ ফুলের সৌগন্ধ গ্রহণ করে না—সে
পচা মদের গন্ধকে গোলাপের সৌগন্ধের সাথে তুলনা করে এবং তোমাদের প্রলোভন দেখায়
স্বর্গ উদ্যানের। শয়তানের দেখানো পথ ছেড়ে যখনি তোমরা ঈশ্বরের দেখানো পথে চলতে শুরু
করবে, তখনি দেখতে পাবে সেই পথে কত সাজানো রয়েছে ফল,ফুলের
বাগান, কত ঝর্ণা, কত খোলা আকাশ,বাতাস, কত রঙবেরঙের পাখি খেলা করছে, গান করছে আকাশে
বাতাসে। তোমাদের প্রাণ-মন জীবন আনন্দে ও
সৌগন্ধে ভরে উঠবে, সেই পথে চলতে চলতে। কোনো ভ্রান্তি বা মরীচিকার কবলে তোমাদেরকে পড়তে হবে না এই পথে। পথে
শুকিয়ে যাবারও ভয় থাকবে না তোমাদের, কারণ তোমরা নদী হয়ে সাগরের সাথে যুক্ত। যে নদী সাগরের সাথে
যুক্ত হবার সৌভাগ্য লাভ করে, সেই নদী কোনোদিন জীবন স্রোত হারায় না। সেই নদীকে
কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে কত নগর, কত সভ্যতা। তোমরা বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী এই বেদ ভুমিতে ও তোমরা প্রাণবন্ত এক-একটা
নদী। তোমাদেরকে ঘিরে গড়ে উঠবে কত নগর সভ্যতা তা কি তোমরা জানো না? হরি ওঁ তৎ সৎ।