[ বেদ যজ্ঞের দ্বারা নিজের দেহ মন্দিরকে ভারতমাতার সন্তানের মন্দির তথা
জীবন্ত ভারত মন্দির রূপে প্রকাশ করো।]
আমরা ভারতের প্রাচীনতার দিকে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবো, যে সমস্ত মহাত্মা
নিজেকে অমৃতের সন্তানরূপে জেনেছিলেন তাঁদেরকে ভারত নামে সম্বোধন করা হতো। ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকেও হে ভারত নামে সম্বোধন করেছেন। যখনি মানুষ নিজেকে অমৃতের
সন্তান বা ভারতীর সন্তান রূপে জানতে পারে তখনি সে দেখতে পায়, যে দেহকে কেন্দ্র করে
তার এই পৃথিবীর বুকে অবস্থান, সেই দেহ তার নিজের নয়। এই দেহ মন্দির হচ্ছে
প্রকৃতিজাত সনাতন ঈশ্বরের মন্দির। এই দেহ মন্দির সৃষ্টি করে চলেছেন তাঁর সমস্ত
সম্পদ দিয়ে মা ভারতী, এই সত্য যখনি মানুষ জানতে পারে তখনি সে ভারত হয়ে যায়। আর সেই
মন্দিরের উপর তাঁর নিজের কোন অধিকার থাকে না। এই মন্দিরের সমস্ত দুয়ার খুলে যায়
সবার মঙ্গলের জন্যে। তাই আলো জ্বালাতে
এসে- নিজে অন্ধকার ঘরে বসে থেকো না। তোমাদের
অন্তরের জ্ঞানের রশ্মিটা ভারতাত্মার জ্ঞানের রশ্মির সাথে যুক্ত করে ভারত
হয়ে উঠো – ভারত হয়েই জ্বালিয়ে দাও একটার পর একটা জ্ঞানের বাতি। নিজে অন্ধকারে থেকে
কখনো অপরকে আলো দিতে পারবে না। পৃথিবী গ্রহ অন্ধকার—তেমনি পৃথিবী স্বরূপ তোমাদের
মানব দেহ মন্দিরটা অন্ধকার থেকে যায়, যতক্ষণ না পরমাত্মা তোমাদের অন্তরে জ্ঞানের
বাতিটা জ্বেলে দেন। এক পরমাত্মা ছাড়া দ্বিতীয় কেউ তোমাদের অন্তরে জ্ঞানের বাতি
জ্বালাতে সক্ষম নন। তাই পরমাত্মার সঙ্গে সংযুক্ত হও আলো জ্বালাবার জন্যে—ভারতীর
সন্তান ভারত হয়ে। জয় ভারত।