[ বেদ যজ্ঞ করে তোমরা
অন্তরকে স্বার্থ শূন্য করে এগিয়ে চলো সত্যের পথে।]
যারা বেদযজ্ঞ করে চলেছেন
শিক্ষাগুরুর আসন অলংকৃত করে তাঁরা যদি স্বার্থপর হন তবে তাঁদের অধীনস্থ শিষ্যরা কি
শিখবে ? স্বাভাবিক নিয়মে তাঁরাও স্বার্থপর হয়ে উঠবে এই মানব সমাজের বুকে। যে দেশের
শিক্ষাগুরু স্বার্থপর হয় সেই দেশের মানব সম্পদ দুর্বল হয়ে পড়ে সবদিক থেকে। দেশের
প্রধান সম্পদ হলো মানুষের চরিত্র। এই চরিত্র গঠনে শিক্ষাগুরুর ভূমিকা খুব
গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে শিক্ষাগুরুরা বর্তমানে এমনভাবে রাজনৈতিক নেতাদের
শিকার হয়ে পড়েছেন তাঁরা আর নিজের চরিত্রকে সত্যের উপর ধরে রেখে মুক্ত চিন্তা করতেই
পারছেন না। অর্থকরী চিন্তার রোগ ও রাজনৈতিক, সামাজিক ধর্ষণের ভয়ে আক্রান্ত হয়ে
তাঁরা দুর্বল ও ভীতু হয়ে পড়েছেন। তাই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়কে আর পবিত্র
বেদযজ্ঞ বেদী রূপে দেখা যায় না। সেসব পবিত্র স্থান স্বার্থপর মানুষদের আড্ডাখানাতে
পরিণত হয়েছে। এই আড্ডাখানা থেকে যে সমস্ত ছেলে- মেয়ে ডিগ্রী নিয়ে বের হয়ে আসছে
তাদেরকেও দেখা যাচ্ছে আড্ডাবাজেই যেন তাদের জীবন আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। অর্থকরী শিক্ষার
ডিগ্রী কিনতে গিয়ে তারা যখন আর অর্থ উপার্জনের পথ পাচ্ছে না তখন তাদের জীবনে
অন্ধকার নেমে আসছে। সত্যের পথ ধরে চলে স্বার্থ শূন্য জীবনের চরিত্র গঠনের শিক্ষা-
দীক্ষা না পাওয়ায় তারা সদায় মিথ্যা অর্থ লোভে মোহে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে এই
সমাজের বুকে। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের শক্তিবলে কিছু করে দেখাবো সবার মঙ্গলের
জন্যে এই চিন্তাশক্তি তাদের মধ্যে কিছুতেই আর জেগে উঠে এগিয়ে চলতে পারে না। যদি
তারা শিক্ষাগুরুর নিকট থেকে সামান্যও সত্যের আলো পেতো তবে সেই আলো শিক্ষাশেষে দপ
করে নিভে যেতো না। বিজ্ঞানের আলোর তেজ একদিন নিভে যেতেই পারে কিন্তু সত্যের তেজ
চিরকাল মানুষকে তেজী করেই ধরে রাখে। তাই শিক্ষাগুরুর অন্তর যত স্বার্থ শূন্য হবে
ততই সেই অন্তরে সত্যের আলো জ্বলবে এবং সেই আলোতেই তিনি তাঁর শিষ্যদের অন্তর
স্বার্থ শূন্য করে আলোকিত করতে সক্ষম হবেন। হরি ওঁ তৎ সৎ।