Home » » বেদ যজ্ঞ করে ঈশ্বর প্রদত্ত শব্দ ভাণ্ডার থেকে অমৃতময় শব্দ উত্তোলন করে কাল জীবন হরণ করার আগেই অমৃতের সন্তান হয়ে অমরত্ব লাভ করো।

বেদ যজ্ঞ করে ঈশ্বর প্রদত্ত শব্দ ভাণ্ডার থেকে অমৃতময় শব্দ উত্তোলন করে কাল জীবন হরণ করার আগেই অমৃতের সন্তান হয়ে অমরত্ব লাভ করো।


[ বেদ যজ্ঞ করে ঈশ্বর প্রদত্ত শব্দ ভাণ্ডার থেকে অমৃতময় শব্দ উত্তোলন করে কাল জীবন হরণ করার আগেই অমৃতের সন্তান হয়ে অমরত্ব লাভ করো।]
গাছে ঝড়া পাতাকে দেখে কচি পাতা হাসে ও তার জীবন নিয়ে ঠাট্টা তামাসা করে। কচি পাতা জানে না তাকেও একদিন কাল হরণ করবে। এখানে কেউ কালের কবল থেকে মুক্ত নয়। কাল সবার জীবন-যৌবনের শক্তি হরণ করার জন্যে সদায় তৈরী হয়ে থাকে। কেবল কাল মহাকাল হয়েও শব্দজ্ঞান ভাণ্ডারকে হরণ করতে পারে না। তাই বুদ্ধিমান জীব জানে প্রাণের সাথে এমন এক শব্দশক্তি লুকিয়ে আছে তাকে যদি অন্তরে সদায় ধরে রাখা যায় তবে কাল তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। এই শব্দশক্তি হলো সদগুরুর উপদেশ বা জীবনের মন্ত্র। এই মন্ত্র যারা একবার পেয়ে যায় তাদের কাছে জন্ম- মৃত্যু তুচ্ছ হয়ে যায়। প্রকৃতির ধারাপাতে এই শব্দশক্তির সাধকদের জন্ম-মৃত্যু বলে কিছু থাকে না। তারা যখন খুশী যেকোন যোনিতে জন্ম নিয়ে নিজের মনের কথা বলে আবার প্রকৃতির বুকে নিজেকে বিলীন করে দিতে পারেএই সাধকদের অধীনে জন্ম-মৃত্যু কাজ করে, তারা জন্ম- মৃত্যুর অধীনে থাকে না। এই বিশাল পৃথিবীর প্রাণের ধারাকে ধরে রাখার জন্যেই তাদের আসা- যাওয়া লেগে থাকে কিন্তু সাধারণ মানুষ কেউ তাদেরকে চিনতে পারে না। যখনি মানব সমাজে সৎ কর্ম – সৎ চিন্তার ধারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে তখনি তারা এসে সেই প্রাচীন ধারাকে নব রূপ দিয়ে পুনঃ প্রবাহিত হবার পথ করে দিয়ে গা ঢাকা দেয়। এই পথপ্রদর্শকরাই হলো ঈশ্বরের বার্তাবাহক দূত। এদের কথা শুনে যুগে যুগে মানুষ নিজেকে জেনেছে অমৃতের সন্তান রূপে এবং মৃত্যুর হাত এড়িয়ে নিজ আত্মাকে অমর জেনে তাকে নিয়ে অমৃতলোকে যাত্রা করতে শিখেছে। জীব দেহমাত্র শব্দ বা বেদের ভাণ্ডার। এই ভাণ্ডার ঈশ্বর প্রদত্ত দান নিজ আত্মার প্রকাশ বিকাশ ঘটানোর জন্যেসমস্ত জীবের জীবন ও আত্মা এই ভাণ্ডারের সাথে যুক্ত। এখান থেকেই জীব প্রাণের শক্তি স্বরূপ শব্দ তুলে নিয়ে সেই শব্দ থেকে অমৃতরস তৈরী করে নিজেকে অমৃতের সন্তান রূপে জেনে অমরত্ব লাভ করে চলেছে যুগ যুগ ধরে। কালের কবলে মানুষ বেদ যজ্ঞের রহস্য বিস্মৃত হয়। বেদ যজ্ঞ করেই মানুষকে ঈশ্বর প্রদত্ত শব্দের খনি থেকে সেই শব্দশক্তিকে উত্তোলন করে পবিত্ররূপ দিয়ে মানব কল্যাণে লাগাতে হয় এবং অমরত্ব লাভ করতে হয় এই ধারা অতি প্রাচীন ধারা। হরি ওঁ তৎ সৎ।  

Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide