[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে তোমার নেতা আমার নেতা সবার নেতা নেতাজীর শূন্য আসন
পূর্ণ করো।]
পরাধীন ভারতবর্ষের জনগণকে বঙ্কিমচন্দ্র,
স্বামীবিবেকানন্দ যখন জাতীয়তাবাদের মন্ত্রে দীক্ষা দিয়ে চলেছেন সেই মুহূর্তেই জেগে
উঠতে শুরু করেছিল ভারতীয় সন্ততির দল এক অফুরন্ত শক্তি নিয়ে। বিষ্ণুপুরাণে সমস্ত
ভারতবাসীর ঐক্য দেখে ভারতে বসবাসকারী সকল মানব সন্তানকে ভারতীয় সন্ততি বলে অভিহিত
করা হয়েছে। তারপর রাজনৈতিক আক্রমণ, ভারতীয় সনাতন ধর্মের প্রতি বিদেশীদের আক্রমণ
ভারতীয় সন্ততিদের ঐক্য বিনষ্ট করে ফেলে। ভারতীয়রা নিজের সনাতন ধর্ম ও ঐতিহ্য ত্যাগ
করতে বাধ্য হয়। দীর্ঘকাল পরাধীন থাকায় তাঁরা দুর্বল হয়ে ভারতবর্ষের ঐক্যের রূপ
ভুলে যান। ব্রিটিশ শাসকদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেন ভারতীয় সন্ততিরা বিভিন্ন কারণে।
এই ব্রিটিশ শাসকরাই পুনঃ সর্বভারতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেন রেলপথ ও আধুনিক যোগাযোগ
ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে। তাঁদের এই উদারতা শিক্ষা ভারতবাসীকে অনেক ক্ষেত্রে
মুগ্ধ করতো এই কথা অস্বীকার করার উপায় নায়। কিন্তু সেই সাথে চলতো ভারতীয় নরনারীর
উপর অত্যাচার ও শোষণ। দুর্বল ভারতবাসীর প্রতিবাদ করার মতো শক্তি ছিল না কারণ
তাঁদেরকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোন নেতা ছিল না। স্বামী বিবেকানন্দের ভাবশিষ্য
সুভাষচন্দ্র বোস সন্ন্যাসী হয়েও ফিরে এলেন ভারতমাতাকে বিদেশীদের হাত থেকে মুক্ত
করার জন্যে। শুরু হলো তাঁর রাজনৈতিক জীবন। বাংলার মাটি থেকেই স্বাধীনতার সংগ্রাম
শুরু কারণ এখানেই ভারতের স্বাধীনতার সূর্য একদিন অস্তমিত হয়েছিল। তাই এই বাংলার
বুকেই নেতাজীর আবির্ভাব ঘটবে এটা কালের নিয়ম। আমরা নেতাজীকে পেয়েছিলাম মুক্তির
সূর্য রূপে এই ভারতের বুকে অনেক আশা নিয়ে। কিন্তু তৎকালীন ভারতবাসী ব্রিটিশদের মোহ
কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। তাই তাঁরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান শত্রু হিসাবে নেতাজী
সুভাষকে চিরকাল উপেক্ষা করেই গোপনে তাঁদের সাথে বিভিন্ন সন্ধি- শলাপরামর্শ চালিয়ে
যেতেন। নেতাজী সুভাষ চিরকাল এক শ্রেণির ভারতীয় রাজনৈতিক নেতার চক্ষুশীল হয়ে
চক্রান্তের শিকার হতেন এই সত্য অস্বীকার করার উপায় নাই। তিনি কখনো চান নি ভারতবর্ষ
পুনঃ নিজের ঐক্য হারিয়ে খণ্ড খণ্ড দেশে পরিণত হউক। তাই ১৯৪৭ সালের ৩রা জুন যখন
ভারত বিভাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন নেতাজী বেঁচে আছেন সব নেতা জানেন, জেনেও
তাঁকে সেই সভায় হাজির করা হলো না। দেশ স্বাধীন হয়েছে তাঁকে নিয়ে দেশের সব নেতারা
রাজনীতি করছেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁর স্বপ্ন পূরণ করার জন্যে ভারতবাসীকে
ঐক্যবদ্ধ করে কেউ আর ভারতীয় সন্ততি বলে ডাকার সাহস দেখাতে পারছেন না। আজকে নেতাজীর
সমস্ত ফাইল প্রকাশ হবে তাতে ভারতবাসীর কি লাভ হবে? ভারতবাসী কি আর সেই ঐক্য ভারত
ফিরে পাবে? ভারতবাসী কি আর কোন দিন সাহসভরে বলতে পারবে আমরা সকলেই সনাতন ধর্মের
অধীনে ভারতীয় সন্ততি ছিলাম- এখনো আছি- ভবিষ্যতে আমাদের ঐক্য ধরে রাখবো। আমরা
পাকিস্থান- বাংলাদেশ- সিংহল- বার্মা –নেপাল- ভুটান- আফগানিস্থান মানি না – আমরা
সবায় এই বিশাল দেশের ভারতীয় সন্ততি--- আমরা সবায় অমৃতের সন্তান। আমরা সবায় আমাদের
প্রিয় নেতার আদর্শে দীক্ষিত ভারতমাতার দেশপ্রেমিক সন্তান ও দেশসেবক। নেতাজী সুভাষ
অমর রহে=== ভারতমাতার জয়।