[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমেই সকলকে সকলের জাতীয় মনোভাব ও জাতীয় চরিত্র গঠন করার
মহান কাজে এগিয়ে আসতে হবে।]
মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্য নির্মাতা। এই ভাগ্য
নির্মাণ হয় বর্তমানে শিক্ষাকেন্দ্রের শ্রেণি কক্ষে। এই শ্রেণি কক্ষের পরিবেশ ও
পরিকাঠামোর উপর নির্ভর করে দেশের ভবিষ্যৎ। আমরা প্রচীন ভারতের দিকে লক্ষ্য করলে
দেখতে পাবো- প্রতিটি গুরু গৃহ ছিল মানুষের জাতীয় মনোভাব ও জাতীয় চরিত্র গঠনের এক
পবিত্র পীঠস্থান। এই সব পীঠস্থান থেকেই মানব সম্পদ দেশের জন্যে উঠে আসতো। কিন্তু
বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর জাতীয়জ্ঞান, মানবিক মুল্যবোধ, নৈতিক
জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের উৎসাহ দিয়ে মানুষের অন্তরকে পবিত্র করে জাতীয়
চরিত্রের মানুষ তৈরী করা হয় না। শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষাদান ও ডিগ্রী প্রদানের
উৎসাহ দিয়ে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে এক মেরুদণ্ডহীন মানুষ রূপে পরিচিতি দেওয়া হয়
মাত্র। এই সব প্রতিষ্ঠানে কচিকাঁচারা নিজেদের চরিত্রকে নিজেদের মতো করে গড়ে তোলার
সাহায্য- সহযোগিতা তাঁদের গুরুদের নিকট থেকে পায় না। তাই তারা নিজেদের চরিত্রকে
জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে এগিয়ে যেতে পারে না। বিশ্বের সব মানুষ একই গুণের ও একই
কাজের উপযুক্ত হয়ে জন্মলাভ করে না কিন্তু সকলেই নিজ নিজ গুণের প্রকাশ বিকাশ ঘটিয়ে
জাতীয়জ্ঞানে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতীয় চরিত্র গঠনে সক্ষম হতে পারে উৎসাহ পেলেই। এই উৎসাহ
দেওয়ার উপযুক্ত লোকের অভাব হেতু ভারতের জাতীয় সংহতি – স্বাধীনতা –একতা আজ প্রতি
পদে পদে বিপন্ন। তাই আবার এই ভারতের বুকে কেবল জাতীয় শিক্ষক দিয়েই মানুষের জাতীয়
চরিত্র গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে—রেডিমেড শিক্ষক দিয়ে পুঁথিগত শিক্ষায় মানুষকে শিক্ষিত
করে ডিগ্রি দেওয়া যেতে পারে কিন্তু তাঁদের দ্বারা দেশের জাতীয় সম্পদ তৈরীর কাজ
চলতে পারে না। তাই যারা জন্মসিদ্ধ শিক্ষক বা গুরু তাঁরাই এগিয়ে আসুন এবং ভারতের
ভাগ্যবিধাতার আসন অলংকৃত করে জাতীয় চরিত্রের মানব সন্তানে দেশকে পরিপূর্ণ করে
তুলুন। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।