[ বেদ যজ্ঞ করে তোমরা দেহাতীত- ত্রিগুণাতীত ও ত্রিকালাতীত আত্মা রূপে বিরাজ
করো।]
তোমরা গুরুর নিকট থেকে যে মন্ত্রেই দীক্ষিত হও না
কেনো তা হচ্ছে জড় দেহ থেকে মুক্তির মন্ত্র। এই মন্ত্র পাওয়ার সাথে সাথে তোমরা
বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মযোগী, জ্ঞানযোগী ও ভক্তিযোগী হয়ে যাও। সমস্ত বন্ধন থেকে
মুক্ত হয়ে তোমাদের মন এক বিন্দুতে স্থির হয়ে যায়। সেই বিন্দু থেকে যে জ্যোতি বের
হয় তা সপ্তলোক বিস্তার করে অবস্থান করে। এই আত্মজ্যোতিতে স্থির হলেই মানুষ নিজের
সৎ- সত্য- সুন্দর ও জ্যোতির্ময় রূপ দেখে নিজের দেহাতীত- ত্রিগুণাতীত ও ত্রিকালাতীত
আত্মাতে স্থির হয়ে যায়। একবার মানুষ এই অবস্থার স্বাদ পেয়ে গেলে তার কাছে এই
পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ তুচ্ছ মনে হয়। সুযোগ পেলেই তখন সে নির্বিকল্প সমাধিতে ডুবে
থেকে পৃথ্বীলোক থেকে শুরু করে সত্যলোক ভ্রমণ করে নিজ আত্মার উপর ভর করে। যেকোন
শ্রদ্ধাশীল মানুষ এই সেতু বন্ধন করে দেহাতীত- ত্রিগুণাতীত ও ত্রিকালাতীত হয়ে
আত্মার এই অমরত্ব নিজের অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখতে সক্ষম। এই অমৃত পান না করা
পর্যন্ত মানুষের নিজের অন্তরের দিব্যজ্যোতির প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা স্থির থাকে
না—তাই তাদের মন- বুদ্ধি- অহংকার আত্মাতে স্থির হয়ে তারা নিজেকে কিছুতেই অমৃতের
সন্তান রূপে জানতে পারে না। আর নিজেকে অমৃতের সন্তান রূপে না জানা পর্যন্ত মানুষকে
বিভিন্ন যোনিতে জন্ম নিয়ে অমৃতের পরিবর্তে জন্ম- মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে যেতে হয়।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।