[ বেদ যজ্ঞ করেই তোমাদেরকে মাটির মানুষ হয়ে মাটির ঋণ পরিশোধ করতে হবে।]
আমি মাটি দিয়ে মানুষকে সৃষ্টি করেছি। তাই মাটি
থেকেই মানুষ উৎপন্ন হচ্ছে, মাটিতেই বাস করছে, মাটির খাবার খেয়ে বেঁচে থাকছে আবার
মাটিতেই মিশে যাচ্ছে। তাই মানুষকে মাটির মানুষ হয়ে মাটির ঋণ পরিশোধ করার জন্যে
বেঁচে থাকার সহজ পথ বেছে নিতে হয়। মাটির ঋণ যে যত পরিশোধ করতে পারবে, সে তত আমার
নিকট প্রিয় হয়ে উঠবে। যারা মাটির ঋণ পরিশোধ করার জন্যে নিজের জীবন উৎসর্গ করে
তারাই দেশ-প্রেমিক, বিশ্বপ্রেমিক হয়ে উঠে। আর যারা মাটিকে বিশ্বাস করেনা তারা
আমাকেও বিশ্বাস করতে পারে না। তারা মাটির মানুষ হয়েও অহংকারী হয়ে ওঠে। যারা মাটির
মানুষ তারা হবে সদা সৃজনশীল। মাটিতে যেমন কোনো বীজ পড়লেই তা অঙ্কুরিত হয়ে বৃক্ষে
পরিণত হয়। তেমনি মানুষের হৃদয়ভুমিতে ভাল- মন্দ যে বীজ পড়ে তা অঙ্কুরিত হয়ে ভাল-
মন্দ বৃক্ষের জন্ম হয় ও তা ফুলে- ফলে – সৌরভে পূর্ণ হয়ে উঠে। যদি মানুষ মাটি থেকে
উৎপন্ন না হতো তবে এমন উর্বর হৃদয়ভুমি পেতো না। মাটির সমস্ত গুণ মানুষের দেহ মন
জুড়ে অবস্থান করছে, তাই তারা মাটির ন্যায় ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অবলম্বন করলে সহজেই
উৎপাদনশীল মানুষ হয়ে নিজের সৎ- সত্য- সুন্দর ও জ্যোতির্ময় রূপের প্রকাশ ও বিকাশ
ঘটাতে সক্ষম হবে।
মাটি সকল
জীবকে ধারণ করে আছে ও সকলের বেঁচে থাকার উপকরণ যোগান দিয়ে চলেছে। এতো সম্পদের
মালিক হয়েও কোন অহংকার করে না আমার কাছে। সেই মাটি থেকে উৎপন্ন মানুষ কেনো অহংকারী
ও ক্রোধী হবে? অহংকার ও ক্রোধ তোমরা পেলে কোথা থেকে? তোমরা অহংকার ও ক্রোধকে জ্ঞান
দ্বারা ছিন্ন করো, তাহলেই তোমরা মাটির মানুষ হয়ে এ পৃথিবীর বুকে পরম শান্তিতে বাস
করতে পারবে। তোমাদের ক্ষেত্র বিশাল। এই ক্ষেত্র মহাশূন্যের সাথে যুক্ত। পৃথিবী
যেমন মহাশূন্যে বাতাসের উপর ভাসছে, তেমনি তোমরা বিশাল ক্ষেত্র নিয়ে বিশালত্বের
সাথে যুক্ত হয়ে মহাশূন্যে ভাসছো। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।