[ বেদ যজ্ঞ করলেই মানুষের অন্তর থেকে ভেদ জ্ঞান মুছে গিয়ে এক ব্রহ্ম
জ্ঞানের উদয় হয়।]
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন যজ্ঞ বহু প্রকারের
থাকলেও বেদ যজ্ঞই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ। এই জ্ঞান যজ্ঞের ন্যায় পবিত্র যজ্ঞ আর
দ্বিতীয় নাই। মানুষ যতই পাপী- অজ্ঞ হৌক না কেনো সে যদি একবার বেদ যজ্ঞ শুরু করে
দেয় তাহলে আমিই তার অন্তরে জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকি। প্রবল আগুনে যেমন যতই
কাঁচা কাঠ দেওয়া হৌক না তা পুড়ে ছায় হয়ে যায়, তেমনি মানুষ বেদ যজ্ঞ বা জ্ঞান যজ্ঞ
শুরু করলেই তার অন্তর থেকে সমস্ত পাপ- অজ্ঞতা- অজ্ঞান সেই যজ্ঞের আগুনে বিনাশ হয়ে
পরিবর্তে বেদ জ্ঞান বা সত্যজ্ঞান প্রচণ্ড শিখা নিয়ে উদিত হতে থাকে। এই বেদ যজ্ঞের
আলোতে মানুষের অন্তরে ভেদ জ্ঞান চিরতরের জন্যে মুছে যায়। এই সনাতন জ্ঞানই মানুষের
সনাতন ধর্ম রক্ষা করে তাদেরকে সবদিক থেকে সুরক্ষিত রাখে। সর্বভূতের সনাতন ধর্মের
রক্ষক এক ব্রহ্মের দর্শন পেয়ে জ্ঞানচক্ষু দ্বারা মানুষ নিজ আত্মাকে সর্বভূতে ও
সর্বভূতের আত্মাকে নিজের আত্মার মধ্যে দেখতে পান। এই দেখায় হচ্ছে মানুষের
আত্মদর্শন বা দেবদর্শন। এই বেদ যজ্ঞের মাধ্যমেই মানুষ কর্মযোগ – ভক্তিযোগ- অভ্যাস
যোগ ইত্যাদির যোগের ফল লাভ করে পরম শান্তিতে সবায়কে একসুত্রে গেঁথে আমার আশ্রয়ে
বাস করতে পারে। ক্ষিতি- অপ- মরুৎ -ব্যোম- তেজ দিয়ে সর্ব জীবের যে পঞ্চপ্রাণ ব্যান,
সমান, উদান, অপান ও প্রাণকে নিয়ন্ত্রণ করে সদায় সর্বভূতে আত্মদর্শন করে মহানন্দে
এক ব্রহ্মে লীন হয়ে সবার মঙ্গলময় যোগে অবস্থান করে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ ।