[ বেদ যজ্ঞ করে নিজের আহার শুদ্ধ রাখো তবেই
ধ্রুবাস্মৃতি লাভ করবে।]
আহারশুদ্ধি থেকে
মানুষের সত্তা বা দেহমনপ্রাণের শুদ্ধি ঘটে- আর সত্ত্বশুদ্ধি থেকে মানুষ
ধ্রুবাশক্তি বা স্মৃতি লাভ করে। ধ্রুবাস্মৃতি বা শক্তি লাভে সকল গ্রন্থির কবল থেকে
মানুষ মুক্ত হয় ও তাঁর বুদ্ধি এক বিন্দুতে স্থির হয়ে যায়। আহার মানে শুধুমাত্র
খাদ্যবস্তু নয়; আমার মানে ইন্দ্রিয়াদি দিয়ে আমরা যা কিছু নিজেদের ভিতরে আহরণ করি।
দর্শন চিন্তন মনন ইত্যাদি সবকিছুই আমাদের আহার। এই আহার গুলি আমাদের দেহমনপ্রাণ-এর
শুদ্ধিকরণ ঘটায়। এই শুদ্ধিকরণ হলেই আমাদের অন্তরে ধ্রুবাস্মৃতি বা ধ্রুবাশক্তির
উদয় ঘটে। তখন আমরা আমাদের স্মৃতিপথে এক ব্রহ্মের বা ঈশ্বরের রূপমূর্তি ছাড়া কিছুই
দেখতে পাই না—সর্বভূতে এক ব্রহ্মশক্তিকে দেখে আমাদের স্মৃতি- বুদ্ধি- জ্ঞান-
বিবেক- অহংকার এক ব্রহ্মে স্থির হয়ে থাকে। এই আহার শুদ্ধির প্রক্রিয়া স্বরূপ
ভারতীয় মুনি- ঋষি- যোগীরা চিরকাল দুদ্ধজাত দ্রবের উপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং
দুগ্ধজাত দ্রব্যের তেজ তাঁদেরকে নীরোগ রাখতেন সর্বদিক থেকে। তাঁরাই বৈজ্ঞানিক
প্রক্রিয়ায় কামধেনু যাকে আমরা গোমাতা কামধেনু বলি তাঁর আবিষ্কার করেন ও গোসম্পদের
উপর নির্ভর করে জ্ঞানের বিপ্লব ঘটান ও দেশকে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলার পথ দেখান।
তাঁদের পথ ধরেই এখনো ভারতীয়রা গরুকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে গোমাতা রূপে পূজা করে
থাকেন। কারণ গোমাতার ন্যায় শুদ্ধ ও পবিত্র আহার বিশ্বের অন্য কেউ দান করতে পারেন
না। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।