Home » » বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও সিদ্ধি কাকে বলে ও সাধনায় কিভাবে সিদ্ধিলাভ করতে হয়।

বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও সিদ্ধি কাকে বলে ও সাধনায় কিভাবে সিদ্ধিলাভ করতে হয়।


[ বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও সিদ্ধি কাকে বলে ও সাধনায় কিভাবে সিদ্ধিলাভ করতে হয়।]
মন্ত্রের সাধন অথবা শরীর পাতন। শরীর চলে যাক এ গেলে আবার নূতন শরীর বা দেহ পাওয়া যাবে কিন্তু সাধনা করতে গিয়ে পিছু হটে এলেই জীবন বিফল হয়ে যাবে। তখন এর ফল এই জীবনেই ভোগ করতে হবে—তাই মনের জোড়কে বাড়িয়ে সিদ্ধি অর্থাৎ সফলতার দিকে এগিয়ে যেতেই হবে। এই মনের জোড় নিয়ে যারাই জীবন পথে এগিয়ে গেছে তাদের জীবনেই সফলতা এসেছে। আমদের দেহ মন্দিরেই সিদ্ধিদাতা গণেশ অষ্ট সিদ্ধি নিয়ে অপেক্ষা করেন সবার হাতে পুরষ্কার স্বরূপ তুলে দেওয়ার জন্যে। এই অষ্ট সিদ্ধি হল—অনিমা, লঘিমা, মহিমা, প্রকাম্য, ব্যাপ্তি, ঈশিত্ব, বশিত্ব ও কামাবসায়িতা।
অনিমাঃ – অনিমার অর্থ অণুত্ব। তোমরা সবায় অণুত্ব হয়ে বিলীন অবস্থায় ছিলে- তারপর কিভাবে এই দেহে এলে এই চিন্তা করলেই দেখবে পূর্বাবস্থায় ফিরে গিয়ে নিজেকে জানতে পারবে ও অণুর ন্যায় নিজেকে মহাশূন্যে ভাসমান দেখতে পাবে।
লঘিমাঃ--- লঘিমা অর্থ হাল্কা। নিজের অবস্থান দেখতে পাবে এই অবস্থায় কিন্তু নিজের গুরুত্ব বা ওজন খুঁজে পাবে না। সব ওজন বা গুরুত্ব তোমার গুরুতে লীন হয়ে যাবে। তখন তোমার ওজন বা ভার সবকিছুই গুরুর উপর বর্তাবে।
মহিমাঃ—মহিমা অর্থ বৃহত্ব বা বড়ত্ব। এই অবস্থায় কেবল ঈশ্বর বা ব্রহ্মকে ছাড়া কারও বড়ত্ব বা বৃহত্ব খুঁজে পাবে না। তাই সদায় তাঁরই মাহত্ম দেখতে পাবে ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে।
প্রকাম্যঃ—এই অবস্থায় সাধক নিজের ইচ্ছাধীন হয়ে অবস্থান করে—তার কোন কামনা –বাসনা থাকে না। কিন্তু প্রাকাম্য অর্থ হচ্ছে – যেমনটি চাইবেন তৎক্ষণাৎ সেটির বাস্তবরূপ নিতে –বা দিতে সাধক সমর্থ হবেন। কিন্তু এই অবস্থায় সাধক কোন কিছুই আকাঙ্ক্ষা করেন না।
ব্যাপ্তিঃ--- ব্যাপ্তি অর্থ হচ্ছে নিজেকে বিস্তার করা বা ছড়িয়ে দেওয়া। এই অবস্থায় সাধক নিজের মধ্যে সর্বভূতকে দেখতে পেয়ে সবার মধ্যেই নিজের শক্তিকে বিস্তারিত করে দেন।
ঈশিত্বঃ – ঈশিত্ব কথার অর্থ হচ্ছে পরম ইচ্ছা। এই অবস্থায় সাধকের ইচ্ছা শক্তি—ক্রিয়া শক্তি ও জ্ঞান শক্তি পরব্রহ্মের সাথে যুক্ত হয়ে পরম সেতু বন্ধন করে তাঁর ইচ্ছানুসারে কর্ম করে যায়। নিজের কিছুই বলার বা করার থাকে না। তাঁদের মুখ দিয়ে যা বের হয় তাই আগুনের ন্যায় পবিত্র জ্ঞান।
বশিত্বঃ বশিত্ব অর্থ বশ করা। সাধক নিজের ইন্দ্রিয়কে বশ করে ইন্দ্রের ন্যায় হয়ে উঠেন। তখন তাঁর অধীনে সকল প্রকৃতি যেন কাজ করে। তিনি স্বাধীন মুক্ত মহারাজ।
কামাবসায়িতাঃ এই অবস্থায় সাধক ঈশ্বরের সাথে এক হয়ে সব সৃষ্টি নিজের ইচ্ছার অধীনে দেখতে পান—আর তাঁর লীলা সাথী হয়ে বিরাজ করেন মহান্দলোকে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।   

Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide