[ বেদ যজ্ঞ করে আত্মজ্ঞান বা বেদজ্ঞান কি তা জেনে নির্ভয়ে নিয়ে আলোকিত হও।]
আত্মজ্ঞান বা বেদজ্ঞান এমন-ই এক জ্ঞান বা
শক্তি যে জ্ঞান লাভ করে সূর্য কোটি কোটি বছর ধরে উজ্জ্বল প্রখর প্রভায় দীপ্তি দিয়ে
বিশ্ব- ব্রহ্মাণ্ডকে ধরে রেখেছে। তাঁর রাজত্বে কোনরূপ বিশৃঙ্খলা দেখা যায় না। সেই
জ্ঞানে ভরপুর হয়ে যখন কোন অবতার এই পৃথিবীর বুকে আসেন তখন কংস, রাবণ, দুর্যোধন
প্রভৃতি দুরাচারদের মতো লোকের প্রাণ দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে শিক্ষা সমাপ্তির
কাজ শেষ করেন না। আর তারা পৃথিবী থেকে এই প্রকৃতির লোকদের হত্যা করেও কাউকে শিক্ষা
দেন না। যাদের অন্তরে এই ধারণা আছে তাদের ধারণা অজ্ঞান দ্বারা আচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে।
অবতার আসেন তাঁর আত্মাজ্ঞান বা বেদজ্ঞানের প্রখর তেজে এই সব দুরাচার লোকদের
প্রবৃত্তিগুলিকে হত্যা করে তাঁদের জীবনকে সৎ- সত্য-সুন্দর ও জ্যোতির্ময় করে দিয়ে
তাঁদের হাতেই বেদের সমাজ গড়ার দায়িত্ব দিতে। নিজে হত হওয়া, কাউকে হত্যা করা কিংবা
কাউকে আত্মহত্যা করার প্ররোচনা দেওয়া বা কাউকে হত্যা করার উৎসাহ দেওয়া এগুলো
কোনটাই আত্মজ্ঞানের পর্যায়ে পড়ে না। রামায়ণ, মহাভারত, গীতা, চণ্ডী আত্মজ্ঞান বা
বেদজ্ঞান দ্বারা লিখিত রূপক দ্বারা আবৃত অবতার ও জীবজগতের জ্ঞান যুদ্ধের কাহিনী।
এই জ্ঞান কলুষিত করা যায় না। আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলে সূর্যকে যেমন দেখা যায় না,
সেইরূপ অজ্ঞান দ্বারা মন- বুদ্ধি- আত্মা আচ্ছন্ন থাকলে এই জ্ঞানের প্রখর তেজ দেহ
মনে জেগে উঠতে পারে না। প্রত্যেক মানব দেহে এই আত্মজ্ঞান বা বেদজ্ঞান অজ্ঞান রূপ
ময়লা দ্বারা আচ্ছন্ন থাকে। একটু করলেই সেই ময়লা পরিষ্কার করে সকলেই এই জ্ঞানের
প্রকাশ- বিকাশ ঘটাতে পারে। এর প্রকাশ –বিকাশ ঘটলেই মানুষের পূর্ব আকৃতির ও
প্রবৃত্তির মৃত্যু ঘটে। তখন সে নব জীবন পায়। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।