[বেদ যজ্ঞ করে তোমরা নিজ নিজ প্রবৃত্তিকে দমন করে উন্নতির পথে এগিয়ে চলো।]
পুরানো অভ্যাসকে ত্যাগ করে নূতন অভ্যাস গড়ে তোলার যারা চেষ্টা করে না তারা
নিজের প্রবৃত্তির দোষ কিছুতেই খুঁজে পাবে না। আর যদি নিজের দোষ খুঁজে না পায় তাহলে
সে কিভাবে সংশোধিত মানুষ হবে? মানুষের অন্তরে সদায় তিনটি প্রবৃত্তি সচল অবস্থায়
কাজ করে। তামস বা পশুর প্রবৃত্তি, রাজস বা মানবিক প্রবৃত্তি এবং সাত্ত্বিক বা
দেবত্ব প্রবৃত্তি। তামস বা পশুর প্রবৃত্তি মানুষকে নির্দ্বিধায় মন্দের দিকে ঠেলিয়া
দেয়। নিজেও ভাল কাজে অংশ গ্রহণ করে না ও অপরকে ভাল কাজে অংশ গ্রহণ করার জন্যে
উৎসাহ দেয় না। রাজস বা মানবিক প্রবৃত্তি জাগলেই মানুষের ভাল কাজে উৎসাহ বেড়ে যায়—মন্দ
কাজ হতে নিজেকেও বিরত রাখে সেইসাথে অপরকেও মন্দ কাজ না করার জন্যে উপদেশ দিতে
থাকে। পরিবেশ পেলে যে কোন ভাল কাজ উৎসাহ উদ্যমের সাথে মানুষ এই প্রবৃত্তিকে জাগ্রত
রেখে করতে পারে। সাত্ত্বিক বা দেবত্ব প্রবৃত্তি মানুষের অন্তরে জেগে উঠলে যাবতীয়
মন্দ ও গর্হিত কাজ থেকে সে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয় এই জগতে সদা ঈশ্বরের প্রেমে ডুবে
থেকে। এই অবস্থায় তার প্রবৃত্তি ঈশ্বরের জ্ঞানের সাথে যুক্ত হয়ে নিবৃত্তি মার্গে
অবস্থান করে ও পার্থিব জগতের জীবনকে অর্থহীন ক্রীড়া কৌতুকময় বলে মনে করে। তাই এই প্রবৃত্তির মানুষকে উৎসাহ
সহকারে কোন পার্থিব জগতের উন্নতির কাজ করতে দেখা যায় না। তাই তাঁরা বেঁচে থেকেও
মৃতবৎ মানুষের ন্যায় সবকিছু দেখে যায় ও আত্মশক্তিবলে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে পূর্ণ করে
মানব জাতিকে বিশাল সম্পদ দান করে যায়—যার মুল্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা সাধারণ
মানুষের থাকে না। ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি।