Home » » বেদ যজ্ঞ করে নারায়ণের অনন্তজ্যোতির সাথে এক হয়ে অবস্থান কর।

বেদ যজ্ঞ করে নারায়ণের অনন্তজ্যোতির সাথে এক হয়ে অবস্থান কর।

[বেদ যজ্ঞ করে নারায়ণের অনন্তজ্যোতির সাথে এক হয়ে অবস্থান কর।]
মহানারায়ণ এবং পরমেশ্বর পরব্রহ্ম এক ও অভিন্ন পবিত্র সত্তা। এই মহানারায়ণের ক্ষুদ্রাণু রূপ হল নর—তাই নর ও নারায়ণের মধ্যে তফাৎ হচ্ছে আলো ও ছায়ার মধ্যে তফাতের ন্যায়। যতক্ষণ আমি স্বরূপ অহংকার থাকে ততক্ষণ নারায়ণের ছায়ার রূপ দেখা যায় আর যখনি জ্যোতি বা আলো এসে উপস্থিত হয় তখন সেই নররূপ ছায়া নারায়ণে লীন হয়ে যায়। এই নারায়ণ হচ্ছেন সহস্রশীর্ষ দেবতা, তিনি বিশ্বচক্ষু বিশ্বোৎপত্তির কারণ। তিনি সকল প্রাণীর চক্ষুতে জ্যোতিঃ হয়ে অবস্থান করেন- তাই তিনি  সর্বদ্রষ্টা। অক্ষরময় পরমপদাত্মক নারায়ণ হলেন বিশ্বময় সমুদ্ভাসিত—তাই তিনি সবার অন্তরে অবস্থান করে সবার অন্তরের কথা জানেন ও শুনেন—তাই তিনি অন্তর্যামী। বিশ্বময় নারায়ণহরি সমগ্র বিশ্বজগৎ ছাপিয়ে নিত্য বর্ত্তমান; এই পরম পবিত্র সত্তায় হলেন বিশ্বের সবকিছু; বস্তুত তাঁকেই আশ্রয় করে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড বেঁচে আছে। এই আত্মেশ্বর বিশ্বপতি হলেন শাশ্বত মঙ্গলময়- প্রেমময় অব্যয় সত্তা। বিশ্বাত্মা এই নারায়ণই হলেন একমাত্র মহাজ্ঞেয় বস্তু- পরম জ্যোতি- পরমাত্মা। যা কিছু এই জগদব্রহ্মাণ্ডে দেখা বা শোনা যায়; তার ভিতর ও বাহির সবকিছুই পরিব্যাপ্ত করে তিনিই অবস্থান করছেন। অনন্ত অব্যয় কবি এবং হৃদয়সমূদ্র থেকে সমুত্থিত বিশ্বস্রষ্টা তিনি পদ্মকোশের মতন আমাদের হৃদয়ে অধোমুখে বিরাজমান। তিনিই এই দেহমধ্যে বিরাজ করে নিজ তেজ ও দীপ্তিতে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে উদ্ভাসিত করে আছেন। সেই হৃদয়কমল আবার নাড়ীসমূহের দ্বারা সম্যকরূপে ব্যাপ্ত হয়েছে বিশ্বসত্তার সবকিছুকে মহিমার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে। তাই তিনিই বেদ যজ্ঞ করে চলেছেন মহাগ্নি রূপ ধারণ করে হৃদয় মন্দিরে। তাই তাঁর প্রভায় ও দীপ্তিতে বিশ্বময় উদ্ভাসিত ও উজ্জ্বল প্রভায় প্রভাবিত। তিনিই সকলকে বিশ্বস্রষ্টা হয়ে বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে বেদযজ্ঞ করার জন্যে আহ্বান করছেন। তিনি সবকিছুর ভিতরে বিভক্ত হয়ে স্থিত হয়েও, সর্বভুকরূপে সবকিছুকে আহার করে সংহত করেন। তাঁর দীপ্তিরশ্মি উপর নীচ পাশে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে আপাদমস্তক এই দেহকে তেজোময় করে তোলে। নীল মেঘের মধ্যে বিদ্যুৎ রেখার মতন বহ্নিশিখা তার উপর নীচে পরিব্যাপ্ত। শস্যদানার উপরের আবরনের মতন সেই শিখা অণুপ্রমাণ সুক্ষ ও পীতবর্ণ। সেই শিখার মধ্যে পরমাত্মা অধিষ্ঠিত। তিনি ব্রহ্মা তিনি শিব তিনি হরি তিনি ইন্দ্র অক্ষর ব্রহ্মপরম স্বরাট এবং এই ছয়মূর্তি ছাড়িয়েও তিনি বিরাজমান। তাই বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়েই বেদযজ্ঞের মাধ্যমে বিশ্বস্রষ্টাকে জানতে হয়—আপন হৃদয় মন্দিরে তাঁকে চিন্তা বা ধ্যান করে। হরি ওঁ তৎ সৎ। বিশ্বমানব শিক্ষা BLOGSPOT.COM

Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide