Home » » বেদ যজ্ঞ সম্মেলন --১৫/ ০৬/ ২০১৬

বেদ যজ্ঞ সম্মেলন --১৫/ ০৬/ ২০১৬



 বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—১৫/ ০৬/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা *মুর্শিদাবাদ পশ্চিমবঙ্গ  আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ-- [ বেদযজ্ঞ করেই সনাতন ধর্ম বা বেদের ধর্মকে এই বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে—তবেই সারা বিশ্বে শান্তি- সত্য- সাম্য ও ঐক্যের প্রতিষ্ঠা হবে।]
 ভারতের সনাতন ধর্মই হলো বিশ্বজনীন মানব জাতি সহ জীবজন্তু- গাছ-পালা, পশুপাখী, এমনি কি জলে স্থলে অন্তরীক্ষে যাকিছু অবস্থান করছে সবার ধর্ম । এই সনাতন ধর্ম,  হিন্দু, মুসলমান, জৈন, বোদ্ধ, খ্রীষ্টান ইত্যাদি কোনও ধর্ম নয়। এটা হচ্ছে সনাতন অর্থাৎ নিত্য ধর্ম যা প্রথম থেকে আছে সবার অন্তরে এবং শেষ পর্যন্ত থাকবে। এই সনাতন ধর্ম হচ্ছে প্রকৃতির ধর্ম। জীবজগতের প্রতিটি জীবের যা ধর্ম সেটাই সনাতন ধর্ম। এই ধর্ম প্রকৃতি থেকে থেকে জাত। প্রকৃতি থেকে যে নিয়মে যে ধারাতে সৃষ্টি হয়ে আসছে—সেই নিয়মে আছে শুধু ‘একম অদ্বিতীয়ম’ অর্থাৎ এক ছাড়া দ্বিতীয় নাই। সবকিছু সেখানে সমসুরে, সমমাত্রায় বাঁধা। এক পৃথিবী, এক চন্দ্র সূর্য, আকাশ, বাতাসের মধ্যে জীবজগৎ নিয়মের Harmony তে কি সুন্দরভাবে একসুরে বাঁধা। ছোট বড় নির্বিশেষে প্রকৃতিজাত প্রতিটি বস্তুর উপর প্রকৃতির সমান নজর, সমদৃষ্টি। তবে প্রকৃতিজাত জীবের মধ্যে কেন থাকবে না সাম্যবাদের সুর? এই যে প্রকৃতিগত বেদভিত্তিক বা জ্ঞানভিত্তিক সাম্যবাদ এই সাম্যবাদই জীবের একমাত্র অস্ত্র বা ধর্ম। এই ধর্মকেই অবলম্বন করে সবাই টিকে আছে ও থাকবে। এই ধর্মকেই ধারণ করে মানুষ পরম সত্যকে জেনে ধাপে ধাপে উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে।

 তবে প্রশ্ন আসতেই পারে হিন্দু- ইসলাম- বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান – ইহুদী – পারসিক- জৈন ইত্যাদি ধর্মগুলি মানব সমাজে স্থান পেলো কোথা থেকে? যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলি একটার পর একটা মানব সমাজে প্রভাব বিস্তার করছে  এবং যখন যেই দল রাজত্ব করছে মানুষ লোভে- মোহে বা অত্যাচারে বাধ্য হয়ে সেই দলে নাম লেখাতে বাধ্য হচ্ছে – তেমনি পূর্বে ধর্মীয় নেতারাই দেশ শাসন করতেন—সমাজকে শাসন করতেন। যখন যে ধর্মের লোক কোন দেশ দখল করে নিয়ে শাসন ভার গ্রহণ করেছে তখনি দলে দলে মানুষ গিয়ে সেই ধর্মের আশ্রয়ে চলে গেছে।  অখণ্ড ভারতে আজ থেকে ৮০০/৯০০ বছর একজনও ইসলাম বা খ্রিষ্টান ধর্মের লোকের চিহ্ন ছিল না। ঠিক যেমন ১০০ বছর আগে এই ভারতের বুকে কংগ্রেস- সি-পি-এম, বি-জে-পি, তৃনমূল কোন রাজনৈতিক দলের চিহ্ন ছিলনা। প্রয়োজনে এই দল বা ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে এবং এগুলি সবই মানুষের মনোজাত ও বুদ্ধিজাত। আজকে সারা বিশ্বে হিন্দু বা সনাতন ধর্মকে কেন্দ্র করে কত লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কত মন্দির- মঠ- আশ্রম গড়ে উঠেছে—সবই কিন্তু প্রাচীন বেদ ও সনাতন ধর্মকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ সবায় নিজের নিজের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম করতে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে মিথ্যার কাছে। আমরা বেদের দিকে তাকালে দেখতে পাবো সেখানেও হাজার হাজার ঋষি- মুনি- দেবতা রয়েছেন—তাঁরাও হাজার হাজার নিজেরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন কিন্তু সবায় এক বেদ ও সনাতন ধর্মকে কেন্দ্র করে কেবল সত্যকে প্রতিষ্ঠা করে ধরে রাখার জন্য। তাঁরা সকলেই ছিলেন সত্যদ্রষ্টা মুনি ঋষি। তাঁরা সকলেই জানতেন একমাত্র সত্যই সকলের কল্যাণ সাধন করতে পারেন। সত্যকে বাদ দিলে মানব সমাজে মিথ্যা মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠবে তখনি মানুষ ধর্মহীন হয়ে পড়বে। তাই এখন বিজ্ঞানের কোলে বসে আমাদের সবার কর্তব্য কর্ম সত্যকে প্রতিষ্ঠা করা—নিজের সনাতন রূপ বা ধর্মকে রক্ষা করা – সারা বিশ্বের মানুষকে বেদপন্থী বা সনাতন পন্থী করে সত্যের আলোতে আলোকিত করা। সনাতন ধর্মকে কেন্দ্র করে বিশ্বে যত প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তাদেরকে সঙ্ঘবদ্ধ করে একসুত্রে বেদযজ্ঞের মাধ্যমে গেথে তোলা। জয় বেদযজ্ঞের জয়। 
Facebook CommentsShowHide
Disqus CommentsLoadHide