বেদ যজ্ঞ
সম্মেলনঃ ১৪/ ০৫/ ২০১৬ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ--[ বেদ যজ্ঞ করে প্রতিদিন নিজেকে নূতন রূপে আবিষ্কার করার পথে এগিয়ে যাও।]
তোমরা বেদ যজ্ঞ না
করার ফলে এই পৃথিবীতে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছো, তাই নিজেদের
মধ্যে সদা ঝগড়া-ঝাটি, তর্ক- বিতর্ক, নিয়ে বৃথা সময় নষ্ট করে দিচ্ছো। আমার জ্যোতিকে
দেখেও তোমাদের শিক্ষা হচ্ছে না। অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ভালো নয়। কোন জিনিষ নিয়ে
অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি বা মাতামাতি করতে যাবে না। বেশী বাড়াবাড়ি করতে গেলে, অতিরিক্ত
কোন জিনিষকে মাজাঘষা করতে গেলে, সে কিন্তু তার স্বাভাবিক ধর্ম হারিয়ে ফেলবে। যে কোন জিনিষকে স্বাভাবিক ভাবে
দেখে, স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করে, তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই চলতে ও বাড়তে দেওয়া
উচিত।সহজ সরল কথা ও সহজ সরল জীবন সংসারে শান্তি ও আনন্দের বাতাবরণ তৈরী করে। মনে রেখো তোমাদের জীবন বেদের সুর খুব মধুর ও সহজ সরল। এখানে কোন
কৃত্রিমতার চিহ্ন পাবে না।
কিন্তু এও মনে রেখো, মানুষ জীবন সহজ জীবন নয়।
কিন্তূ সহজ জীবন যাপনের মাধ্যমেই তার মূল্যবোধ অনুমান করা যায়। সেজন্য প্রয়োজনের
অতিরিক্ত কোন জিনিষ গ্রহণ করবে না। যখনই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন জিনিষ গ্রহণ করবে
তখনই কিন্তূ তার মূল্যবোধ
হারিয়ে ফেলবে। আর সেইসঙ্গে তুমি তোমাকে সেই পার্থিব বস্তুর মধ্যে হারিয়ে ফেলে একটা
জড়বস্তুতে পরিণত হবে। নিজের অস্তিত্বের কথা আর কিন্তূ তোমার মনে থাকবে না। সব ভূলে
গিয়ে গণ্ডোগোল হয়ে গিয়ে জীবনটাই পণ্ড হয়ে যাবে। হাবু-ডুবু খেতে থাকবে এক
পঙ্কিলতাময় পরিবেশের মাঝে। বেদ বিহীন জীবনের বোঝা বইতে তখন গাধার ন্যায় পরিশ্রম করতে হবে, অথচ সংসারে
তোমার পরিশ্রমের কোন মুল্য পাবে না।
বেদ যজ্ঞ করতে গিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা কারও সাথে বলবে না। কথা বলার খুব বেশী ইচ্ছে হলে
নিজের মনের কথা প্রকাশ করবে দৈনন্দিন লিপিতে। তোমার সংসারের সব কাজের মাঝে অবসর
করে নিয়ে অন্তত পাঁচবার ধ্যান- জপ করবে—ভগবানের চিন্তা করবে। ভগবানের কাছে
প্রার্থনা জানাবে নিজের ভাষায় নিজের মনের কথা বলে। সময় পেলে ভালো বই পড়বে। মনের কথা খাতাতে লিখে রাখবে। নিজেকে সুন্দর ভাবে বিকশিত করার চেষ্টায় রত থাকবে। সব কাজের মাঝে বেদ যজ্ঞ করতে ভুলবে না – এই যজ্ঞের দ্বারাই তোমার জীবনকে
বহে নিয়ে যাবে সৎ- সত্য- সুন্দর ও জ্যোতির্ময়ের সাথে মিলত হবার লক্ষ্যে।
বেদ যজ্ঞ করে
প্রতিদিন নিজেকে নূতন ভাবে আবিষ্কার করবে। ধ্যানের মাধ্যমে নিজের নিত্য
নূতন স্বরূপ দেখতে পাবে। তবেই এক ঘেয়েমি জীবনের পঙ্কিলতা থেকে রেহাই পাবে।
উপলব্ধির মাধ্যমেই কেবল প্রতিদিন নূতন নূতন পরিবেশে যাওয়া সম্ভব। তাই প্রতিনিয়ত
নূতন নূতন উপলব্ধি করার সাধনায় রত থাকতে হবে। মনে রেখো বাহ্যিক নূতন পোশাক
পাল্টানোই নূতন পরিবেশ নয়।
সুচরিতা পরমপিতার উপদেশ পেয়ে খুব খুশী। সে তাঁর চরণ স্পর্শ করে বললো; পিতা,
আপনি যে উপদেশ দিলেন তা পালন করে নিজেকে আবিষ্কার করার সময় কোথায়? আমরা অন্ধকারের
জীব অন্ধকারেই থেকে যাব আপনার কৃপা না পেলে। তাই বলি সত্যম শিবম সুন্দরম গুরু কৃপাহি কেবলম। হরি ওঁ তৎ সৎ।