বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ –১৬/
০৫/ ২০১৬ আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ-- [ বেদ যজ্ঞ করলেই মানুষের চেতনা শক্তি বাড়তে থাকে এবং এই চেতনা শক্তির দ্বারাই মানুষ
আত্মজ্ঞানী হয়ে উঠে।]
মানুষ চিন্তাশীল জীব। তাই তারা বেদ যজ্ঞের
দ্বারা নিজের চিন্তা শক্তিকে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করতেও সক্ষম। এই চিন্তার সাথেই
তাদের জীবন- যৌবনের ভাল মন্দ কাজ যুক্ত হয়ে থাকে। মানব আত্মা হচ্ছে হচ্ছে খুব সুক্ষ
এক সচেতন যন্ত্র এই মানব দেহে। একে বাইরের কোন বিজ্ঞানের যন্ত্র দ্বারা দেখা সম্ভব
নয়। কিন্তু এই যন্ত্রটাই চেতন থেকে মানব দেহকে সক্রিয় করে রাখে। আমরা আমাদের জীবনে
শৈশব- কৈশর- যৌবন ও বার্ধক্যকে দেখতে পায়, কিন্তু এতে আমাদের আত্মার কোন প্রভাব
পড়ে না। শৈশবে যে অবস্থায় আত্মা নামে যন্ত্রটি দেহে ছিল, বার্ধক্যতেও সেই অবস্থায়
থাকে ।
তাই -----------------------------------------------------------------------------ছোট বেলার কথাগুলি যখন মনে
পড়ে
এ্যালবামের ছবিগুলি দেখি
চুপটি করে।
মায়ের পেটে ছিলাম আমি
বিশ্বাস না হয়
কেমন করে বড়ো হলাম জানতে
ইচ্ছে হয়।
বকাবকি ভাগ্যে জুটে একটু
ভুল হলে
কথায় কথায় বলে সবায় যাও এখন
চলে।
বড়োদের কথার মাঝে থাকতে
নাহি হয়
জানার বয়স হলে তা জানবে
সবায়।
এই জানার ইচ্ছে প্রত্যেক
শিশুর অন্তরে কাজ করে নিজের জীবন নিয়ে। তারা যদি ছোটবেলা থেকে জীবন ও যৌবনের
প্রকৃত সত্য জানতে পারে তবে তারা সচেতন মানুষ হয়ে উঠবে নিজেকে জেনে। সচেতন মানুষের
অভাব হেতু আজ সারা বিশ্বে জীবন- যৌবন নিয়ে মানুষ দিশেহারা। তারা নিজেকে প্রকাশ
করতে গিয়েও কৃত্রিমতার আশ্রয় গ্রহন করছে। সহজ সরল কথা সহজ সরল ভাবে বলতে পারছে না।
এই চেতনা শক্তির অভাব হেতু মানুষ আজ সহজ সরল সত্যকে বিশ্বাস করতে পারে না।
জীব মাত্র প্রাণকে বাঁচাবার
জন্য সচেতন। একটি পিঁপড়েকে ধরতে গেলে সে পালায়। বিপদ দেখলে সে তার ডিমকে মুখে নিয়ে
অন্যত্র চলে যায়। এর পিছনে জীবের চেতন শক্তি কাজ করে। কোন কোন মুহূর্তে জীবের চেতন
শক্তি কাজ করে বাইরের ও ভিতরের উত্তেজনায় সাড়া দেয় তা লক্ষ্য করলে, তোমরা প্রাণ
সৃষ্টির মূলে জীবের উত্তেজনার মুহূর্তগুলি দেখতে পাবে। জীবের চেতন শক্তি আছে বলেই
দেহ মনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এই চেতন শক্তিকে মানুষ জ্ঞান শক্তিতে রূপান্তরিত করে
উন্নত থেকে উন্নততর মানুষ তৈরীর দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আদিম সভ্যতা আজ আধুনিক
বৈজ্ঞানিক সভ্যতায় পরিণত হয়েছে মানুষের চেতন শক্তির বলে। মানুষ যত সচেতন হবে তার
সন্তান ততবেশী শক্তিশালী ও জ্ঞানী হয়ে জন্মাবে স্বাভাবিক নিয়মে।
তাই আমরা যদি বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে নিজ নিজ
পরিবারের সন্তান- সন্ততিকে নিজের এই আত্মার সতেনতা নিয়ে শিক্ষা দিই তাহলে প্রতিটি
মানব সন্তান দেবত্ব গুণ নিয়ে জেগে উঠতে সক্ষম হবে। আমরা কেউ মানবাত্মার দিকে
লক্ষ্য রেখে আমাদের ছেলে –মেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করি না। আমাদের শিক্ষা
ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাইরের জগতকে নিয়ন্ত্রণ করে- বাইরের জগতের উন্নতি করার উপর
নির্ভরশীল শিক্ষা ব্যবস্থা। কেবল এই শিক্ষার উপর নির্ভরশীল মানুষ মানব জীবনের যে
অমৃতের স্বাদ তা লাভ করে জীবন ধন্য করতে পারেনা। তাই আমাদেরকে পার্থিব জগতের
উন্নতির শিক্ষার সাথে সাথে আত্মিক জগতের উন্নতির শিক্ষারও ব্যবস্থা করতে হবে
পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য। এই ব্যবাস্থা করতে পারলেই আমাদের জীবন – যৌবন- সম্পদ
কোন কিছু নিয়েই আর সংশয় থাকবে না । ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।