বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ –১৫/ ০৫/ ২০১৬ আজকের
আলোচ্য বিষয়ঃ-- [ বেদ যজ্ঞের
দ্বারা যে যেমন চিন্তা করে জীবন গড়তে চাইবে সে তেমনি জীবন লাভ করে সৌগন্ধ
ছড়াবে।]
ঈশ্বর সর্ব গুণের অধিকারী হয়ে সবার মধ্যেই বিরাজ
করছেন। তাঁকে নিয়ে যে যেমন চিন্তা করবে—সে তেমন কাজ করবে এবং সেই কাজের বিনিময়ে তার জীবন গড়ে উঠবে। এই মানব সমাজের বুকে যার যেমন কাজ তার তেমন মর্যাদা। সেই মর্যাদার উপর জীবন চলতে থাকে সমাজের বুকে নিজের গতি নিয়ে। ছোটবেলা থেকে যদি মানুষ ভালো পরিবেশে থেকে ভালো চিন্তা করতে শিখে তবে নিশ্চয়
সে জীবনে ভালো কাজ করে মর্যাদার আসনে বসবে। তাই মানুষকে প্রথমে ভালো পরিবেশ তৈরী
করতে হয় নিজ পরিবারে বেদের আলো দিয়ে। নিজ নিজ পরিবার থেকেই মানুষ ভালো
মন্দ চিন্তা করতে শেখে ও সেই চিন্তা দিয়ে নিজেকে ভাল-মন্দ রূপে গড়ে তোলার চেষ্টা
করে। কেবলমাত্র সৎচিন্তা দ্বারা মানুষ তার প্রবৃত্তিকে দমন করতে পারে এবং কুপ্রভাব
থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারে। কুসঙ্গে স্বভাব নষ্ট। একজন ভালো ছেলে-মেয়েও কুসঙ্গে
পড়ে খারাপ হয়ে উঠতে পারে। তাই পারিবারিক শিক্ষা যদি ভালো হয় তবে নিশ্চয় সেই
পরিবারের সদস্য কুসঙ্গে পড়বে না। এক্ষেত্রে পরিবারের পিতা-মাতার গুরুত্ব অপরিসীম।
পিতা-মাতা যদি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে তাঁর
নির্দেশিত পথ ধরে চলে এবং নিজের অন্তর জগতকে শাসন করতে অভ্যস্ত হয়ে থাকে,
তবে সেই শিক্ষার প্রভাব সহজে তাদের সন্তানদের উপর পড়ে।কেন আমরা পূজা অর্চনা করি,
কেন আমরা উপবাস করি, কেন আমরা নামাজ পড়ি, রোজা রাখি, সবকিছুর মূলে হচ্ছে অন্তর
জগতকে শাসন করে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল
শিক্ষা। যদি মানুষ নিজের অন্তর জগতকে শাসন করে নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারে, তবে
যেকোন মুহূর্তে সে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে অথবা চরিত্র কলঙ্কিত হয়ে যেতে পারে। মানুষ
চিন্তাশীল জীব তাই যে কোনো মুহূর্তে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে অন্তর জগতের
নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে। মানুষ বাদে অন্য কোনো জীব আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় না—কারণ
তাদেরকে অন্তর জগতের শাসনের শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় না। তারা সম্পূর্ণ ভাবে প্রকৃতি
নির্ভর ও দেহ নির্ভর স্বভাব ধর্ম পালন করে। তারা চিন্তা শক্তি বাড়িয়ে নিজেদের
স্বভাব পরিবর্তন করতে সক্ষম হয় না। কিন্তু মানুষ চিন্তা শক্তি বাড়িয়ে স্বভাব ও
গুণের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম ও দেবত্বে উপনীত হতে সক্ষম। তাই চিন্তা শক্তির দ্বারা
যে মানুষ ভালো ভালো অভ্যাস গড়ে তোলে সেই মহৎ মানুষে পরিণত হয়। তোমরা বিশ্বমানব
শিক্ষার কর্মী হয়ে বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে স্বভাবের পরিবর্তন ঘটাও, সুন্দর স্বভাব গড়ে তোলো চিন্তাশক্তির সাহায্যে
প্রতিনিয়ত সু-অভ্যাস দ্বারা, তাহলেই বিশ্বশান্তি ঐক্য ও সাম্য প্রতিষ্ঠার ডাক দিতে
পারবে বিশ্ববাসীকে। হরি ওঁ তৎ সৎ।